সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে কার্যকর হল CAA, ঘোষণা কেন্দ্রের। আজ রাত ১০ টায় কার্যকর হতে পারে CAA বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, এমনটা জানা গেলেও সপ্তাহ শুরুর সন্ধ্যাতেই জারি হল অর্ডিন্যান্স। উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে শাসক দলের একাধিক নেতা দাবি করেছিলেন, খুব শিগগির সিটিজেন অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা সিএএ জারি হতে চলেছে দেশে। এদিন সেই দাবিতেই সিলমোহর দিল অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই সিএএ পাশ করিয়েছিল কেন্দ্রের মোদি সরকার। এই আইনের উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সে দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান, তা হলে তা দেবে ভারত। CAA লাগু নিয়ে একাধিক বিজেপি নেতা দাবি করলেও বঙ্গ সফরে এই বিষয়ে মুখ খোলেননি প্রধানমন্ত্রী মোদি। সোম সন্ধ্যায় কার্যত আচমকাই CAA ঘোষণা করল কেন্দ্র। উসকে উঠল নোটবন্দির স্মৃতি।
[আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মামলা কংগ্রেসের]
কিছুদিন আগেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর হচ্ছে, দাবি করেছিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেছিলেন, ‘‘ভোটের আগে সিএএ কার্যকর হচ্ছেই। ভোট ঘোষণার এক-দু’দিন বা তিন দিন আগে হলেও সিএএ কার্যকর হবে। এমনকি, নির্বাচনী বিধি চালু হওয়ার এক ঘণ্টা আগেও সিএএ কার্যকর হতে পারে।’’ বিরোধী তৃণমূল অবশ্য বিষয়টিকে ‘উদ্বাস্তু মানুষদের ভাঁওতা দেওয়ার চেষ্টা’ বলে কটাক্ষ করে। এদিন কেন্দ্রের ঘোষণার পরেই দেখা গেল, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে আনন্দ মেতে উঠেছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে বলেই মনে করছেন তাঁরা। যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, CAA ঘোষণা বিজেপির রাজনৈতিক চমক। সেই কারণেই তা লোকসভা ভোটের আগে ঘোষণা করা হয়েছে।
এক্স হ্যান্ডেলে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ লিখেছেন, চার বছর তিন মাস লেগে গেল CAA লাগু করতে! যে আইন সংসদে পাশ হয়েছিল ২০১৯ সালে। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁর সরকার কর্পোরেট সংস্থার মতো সময় মেনে কাজ করে। CAA লাগু করতে এতখানি সময় নেওয়াতে বোঝা গেল, প্রধানমন্ত্রী কত বড় মিথ্যুক। কংগ্রেস আরও দাবি করেছে, গেরুয়া শিবির আসলে সঠিক সময়ে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ প্রয়োগের জন্য অপেক্ষা করছিল। নির্বাচনী বন্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের কঠোর নির্দেশ ধামা চাপা দেওয়াও হঠাৎ CAA লাগু করার অন্যতম উদ্দেশ্য। পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে মেরুকরণের রাজনীতিতেও হাওয়া দিল বিজেপি সরকার। বিশেষত বাংলা এবং অসমে। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনারের হঠার পদত্যাগেও অস্বস্তিতে ছিল কেন্দ্র। CAA নিয়ে ডামাডোলে সেই অস্বস্তিও মুছতে পারে।
[আরও পড়ুন: ১৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে বৈঠক! শূন্যপদে নিয়োগ দুই নির্বাচন কমিশনারকে]
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ (২০১৯)-কে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক জনস্বার্থ মামলা হয়েছে দেশের বিভিন্ন আদালতে। ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিএএ-র বিরুদ্ধে আর্জির প্রথম শুনানি শুরু হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। ওই বছরেরই ১১ ডিসেম্বর সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পর দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তার পরেও অবশ্য ২০২০-র ১ জানুয়ারি বিলটি আইনে পরিণত হয়। সোমবারই তা কার্যকর হতে চলেছে বলে খবর।