সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৬৬, ১৯৭৪ সালের পর ১৯৮৩। ১১০টি ম্যাচের টেস্ট কেরিয়ারে মাত্র তিনবার ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens) খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। এর মধ্যে দুবার তাঁর অধিনায়কত্বে ভারতের বিরুদ্ধে বাইশ গজের যুদ্ধে নেমেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ (West Indies)। তিনি এক ও অদ্বিতীয় ক্লাইভ লয়েড (Clive Lloyd)। দুবারের বিশ্বকাপ জয়ী ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক অনেক বছর পর আবার ক্রিকেটের নন্দন কাননে পা রাখলেন। শনিবার, ১৩ জানুয়ারি জীবন্ত কিংবদন্তিকে বিশেষ সম্মান জানাল বঙ্গ ক্রিকেট সংস্থা (Cricket Association Of Bengal)। লয়েডের হাতে তাঁর নামাঙ্কিত সোনার ব্রেসলেট তুলে দিলেন সিএবি-র সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় (Snehasish Ganguly)। তবে সম্মানিত হলেও ২০ ওভারের ক্রিকেটকে কটাক্ষ করতে ভুলে যাননি একদা দাপুটে বাঁহাতি ব্যাটার।
টি-২০ ফরম্যাটের জন্য কি টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি টান কমে যাচ্ছে? এই ইস্যু নিয়ে অনেক বছর ধরেই চলছে আলোচনা। তাঁকেও ফের এই প্রশ্ন শুনতে হল। লয়েড বলে দিলেন, “টি-২০ ক্রিকেটের সঙ্গে আমার কোনও বিরোধিতা নেই। ক্রিকেটাররা দুহাতে রোজগার করবে, এটা তো খুবই ভালো ব্যাপার। তবে আমি এটা দেখার অপেক্ষায় থাকি যে তিন কিংবা পাঁচটি টেস্ট ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আরও বেশি আয়োজন করা হচ্ছে। সেটা হলে আমি আরও খুশি হব।” এখানেই অবশ্য থেমে থাকেননি তিনি। লয়েড এবার ২০ ওভারের ফরম্যাটকে কটাক্ষ করে যোগ করলেন, “আমার মতে টেস্ট ক্রিকেটই হল আসল পরীক্ষা। টি-২০ ক্রিকেট তো অনেকটা প্রদর্শনী ম্যাচের মতো।”
[আরও পড়ুন: অজিদের বিরুদ্ধে লড়েও হার, এশিয়ার মঞ্চে সম্মান আদায় করল সুনীল-সন্দেশের ভারত]
এদিনের সন্ধ্যায় লয়েডকে সম্মান জানানোর আগে তাঁকে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া হয়েছিল। প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের কেরিয়ার নিয়ে একটি ১০ মিনিটের ভিডিও দেখানো হয়। এর পর সিএবি-র তরফ থেকে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় সোনার ব্রেসলেট ও ব্লেজার। এর পর ইডেনের প্রসঙ্গ আবেগী লয়েড বলেন, “আরও একবার ইডেনে পা রাখলাম। দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক হিসেবে ভারত সফরে এসে এই মাঠে টেস্ট খেলেছিলাম। শুধু আমি নই, আমাদের দেশের একাধিক ক্রিকেটার ইডেনে খেলতে পচ্ছন্দ করে। এই মাঠ, এই গ্যালারির মধ্যে আলাদা একটা ব্যাপার রয়েছে। সেই টানেই বারবার ইডেনে ফিরে আসা।”
কেরিয়ারে মাত্র তিনটি টেস্ট ইডেনে খেলেছেন। জয় একটি ম্যাচে। ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের পর ভারত সফরে এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেই সফরে কপিল দেবের বিশ্বজয়ী দলকে একেবারে ল্যাজেগোবরে করে চলে যান স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডস-জোয়েল গার্নার-ম্যালকম মার্শালরা। ৩-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জেতার পর, পাঁচ ম্যাচের একদিনের সিরিজে ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ক্যারবিয়ানরা। সেবার ইডেনেই ২৯০ বলে ১৬১ রানে অপরাজিত ছিলেন লয়েড। তাঁর দল ইনিংস ও ৪৬ রানে জয় পেয়েছিল। সেই পয়া মাঠেই আবার ফিরলেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি।