গোবিন্দ রায়: শর্তসাপেক্ষে রাজভবনে যেতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বিচারপতি সিনহা কার্যত পুলিশকে তুলোধোনা করেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য নতুন করে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে আবেদন জানাতে হবে শুভেন্দুকে।
বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যপাল অনুমতি দিলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) এবং ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও। রাজ্যপালের অনুমতি পেলে কতজন তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন এবং যদি গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে কটি গাড়ি রাজভবনের ভিতরে যাবে তা জানাতে হবে পুলিশকে। তবে শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবীর সওয়াল, "আমরা কোনও গাড়ি ভিতরে নিয়ে যাব না। সবাই হেঁটে রাজভবনের ভিতরে যাব।" রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যাঁরা ভিতরে যাবেন, তাঁদের শনাক্তকরণের কাজ শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষের কাউকে করতে হবে। রাজ্যের শর্তে রাজি হন বিচারপতি। তিনি জানান, শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষের কেউ শনাক্ত করবেন। তবে কারও পরিচয় নথিবদ্ধ করা যাবে না। নাহলে আবার পরে হেনস্তার আশঙ্কা প্রকাশও করেন বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: কসবার অ্যাক্রোপলিস মলে বিধ্বংসী আগুন, ধোঁয়া দেখে হুড়োহুড়ি ক্রেতাদের]
উল্লেখ্য, ভোটের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগে সরব শুভেন্দু, সুকান্তরা। তাঁদের জন্য কলকাতার একটি ধর্মশালা ‘মাহেশ্বরী ভবন’ ভাড়া করা হয়েছিল, আশ্রয় দেওয়ার জন্য। সেখানে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখাও করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা নতুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু সেই মাহেশ্বরী ভবন থেকেও নাকি তাঁদের বের করে দেওয়া হয়েছে। এর পরই শুভেন্দু অধিকারী সেসব ঘরছাড়াদের নিয়ে রাজভবন যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালকে এই সংক্রান্ত বিষয় জানিয়ে ইমেল পাঠান। তাঁর দাবি, রাজ্যপালের সচিবের তরফে জানানো হয়, ঘরছাড়াদের নিয়ে রাজভবনে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল, রাজ্যপাল সকলের সঙ্গে দেখা করবেন।
সেইমতো বৃহস্পতিবার তাঁর সকলকে নিয়ে রাজভবনের উদ্দেশে রওনা দেওয়া। কিন্তু মাঝপথে পুলিশ তাঁদের আটকায়। রাজভবনের চারপাশে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। একঘণ্টা গাড়িতে বসে থাকার পর নেমে আসেন শুভেন্দু। পুলিশের কাছে জানতে চান, কী কারণে আটকানো হল? পুলিশ জানায়, ১৪৪ ধারা জারি, তাই রাজভবনে এতজন মিলে যেতে পারবেন না। এর পরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী। সাংবাদিকদের সামনে পেয়ে তিনি অভিযোগ করেন, রাজভবন থেকে ২০০ জন ঘরছাড়াকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এখানে ১৪৪ ধারার নাম করে বিরোধী দলনেতাকে মাঝপথে আটকাচ্ছে পুলিশ। এই যুক্তি গ্রাহ্য হয় না। এর পর শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী।