সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুজো কার্নিভালের দিনই দ্রোহের কার্নিভালের ডাক। প্রতিবাদী চিকিৎসকদের এই কর্মসূচিতে বাধা দিতে কার্যত ধর্মতলার আশেপাশের ৯ জায়গায় জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ। তার বিরোধিতায় চিকিৎসকদের সংগঠন কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতেই মিলল সমাধান। মঙ্গলবার দুপুরে হাই কোর্টের বিশেষ বেঞ্চ জরুরি ভিত্তিতে শুনানির পর সাফ জানিয়ে দিল, কলকাতা পুলিশের ওই বিজ্ঞপ্তি 'অসামঞ্জস্যপূর্ণ'। রানি রাসমনি অ্যাভিনিউতে দ্রোহের কার্নিভাল হতে কোনও বাধা নেই। যাঁরা যোগ দিতে চাইবেন, তাঁদের আটকাতে পারবে না পুলিশ। হাই কোর্টের এই নির্দেশের পরই এলাকা থেকে পুলিশের ব্যারিকেড সরানো শুরু হয়েছে। বিচারপতি কাপুরের আরও নির্দেশ, একই জায়গায় দুই কার্নিভাল যদি সমস্যাজনক মনে হয়, তাহলে রেড রোড এবং রানি রাসমনি রোডকে ব্যারিকেড দিয়ে পৃথক করা হোক।
ধর্মতলা চত্বর থেকে সরানো হচ্ছে গার্ডরেল নিজস্ব ছবি।
এদিনের শুনানিতে দ্রোহের কার্নিভালের ডাক দেওয়া জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের তরফে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ''দ্রোহের কার্নিভাল আয়োজন করতে চেয়ে গত ১১ অক্টোবর চিঠি দেওয়া হয়েছিল। রেড রোড থেকে খানিকটা দূরে অর্থাৎ পুজো কার্নিভালে কোনওরকম অসুবিধা না করেই এই কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। আর ডাক্তাররা গুন্ডা নন যে তাঁদের দ্বারা কোন ক্ষতি হবে। শান্তিপূর্ণভাবে তাঁদের কর্মসূচি হবে, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি।'' তাতে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য ছিল, ওই কর্মসূচির তাৎপর্য কী, তা আয়োজকরা জানাননি। ফলে তা অস্পষ্ট ছিল।
রানি রাসমনিতে 'দ্রোহ কার্নিভালে' আমজনতাও। নিজস্ব ছবি।
তাতে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, দুটি কর্মসূচি একসঙ্গে হলে অসুবিধা কোথায়? রাজ্য কি তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না? তা করতে হলে কী কী শর্ত দিচ্ছে রাজ্য সরকার? তাতে রাজ্যের আইনজীবী জানান, প্রস্তাব, আজকের বদলে অন্য কোনও দিন হোক চিকিৎসকদের কার্নিভাল। বুধবার রামলীলা ময়দানে তা হোক। দুপক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে বিচারপতি রবি কিষাণ কাপুর বলেন, ''শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে সকলের। আদালত বার বার তা বলেছে। এই কার্নিভাল করতে বাধা দেওয়া যাবে না।'' উচ্চ আদালতের এই রায় শুনে উচ্ছ্বসিত চিকিৎসকরা। সঙ্গে সঙ্গে রানি রাসমনি এলাকা ঘিরে যে পুলিশের ব্যারিকেড ছিল, সেসব সরিয়ে দেওয়া হয়।
পোস্টার, ব্যানারে ছয়লাপ এলাকা। নিজস্ব চিত্র।