গোবিন্দ রায়: নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের (Kalighater Kaku) কন্ঠস্বর নিয়ে চলেছে অনেক টালবাহানা। কন্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকদের। অবশেষে সামনে এসেছে সেই নমুনার ফরেনসিক রিপোর্ট। কন্ঠস্বরের নমুনা মিলেছে বলেও আদালতে জানিয়েছে ইডি। কিন্তু তার পরেও তদন্তের অগ্রগতি কোথায় ? সেই প্রশ্নই তুলল কলকাতা হাই কোর্ট।
আদালতে জমা দেওয়া ইডির রিপোর্ট নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আদালতের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বিচারপতির মন্তব্য, "আগে বলছিলেন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বরের নমুনার রিপোর্ট আসছে না তাই তদন্ত এগোচ্ছে না। এখন বলছেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জন্য মানিক ভট্টাচার্যকে ভালো করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছি না। হচ্ছেটা কী?" যদিও আদালতে ইডির দাবি, "প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য এই নিয়োগ দুর্নীতির কিংপিং। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছে না ইডি।"
[আরও পড়ুন: গরমে বিপদ বাড়াচ্ছে অতিরিক্ত গ্লুকোজ-ওআরএস, সতর্ক করলেন চিকিৎসকরা]
প্রসঙ্গত, আদালতের নজরদারিতে হচ্ছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত। এদিন তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আদালতে রিপোর্ট দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ও সিবিআই। বিচারপতি সিনহা জানতে চান সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বরের ফরেনসিক রিপোর্ট এসেছে কিনা। উত্তরে ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বলেন, "সুজয়কৃষ্ণের কন্ঠস্বরের নমুনা মিলে গিয়েছে। আমাদের স্বপক্ষেই রিপোর্ট এসেছে।" তার প্রেক্ষিতে আয়ের উৎস কী, জানতে চান বিচারপতি। আদালতের আরও প্রশ্ন, "টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আপনারা কি খুঁজে দেখেছেন যে চাকরি বিক্রি হয়েছে কিনা ?" এর সাপেক্ষে কোনও উত্তর দিতে পারেনি ইডি।
এর পরেই অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতির ফের প্রশ্ন, "আপনাদের মনে হয় না যে এই রিপোর্ট অসম্পূর্ণ ? এই রিপোর্ট যদি আপনাদের পক্ষে থাকে তাহলে ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পর আপনারা কী করলেন ?" ইডির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, "আমাদের তদন্তকারীরা সারা দিন-রাত কাজ করছে। খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। আমরা আরও একাধিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছি। আমরা রোজ তদন্তে অগ্রগতি করছি।" রিপোর্ট দিয়ে তাঁর দাবি, ইডি সম্প্রতি ১৩৪ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। তার প্রেক্ষিতে আদালতের মন্তব্য, আপনার মনে হয়না যে দুর্নীতির অনুপাতে ১৩৪ কোটি খুব নগন্য অংকের টাকা ? এই রিপোর্ট সন্তোষজনক নয় বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। আগামী ১২ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে ফের রিপোর্ট দিতে হবে ইডিকে।