শুভঙ্কর বসু: উৎসবের মরশুমে রাজ্যে নিষিদ্ধ বাজি। দীপাবলি, জগদ্ধাত্রী পুজো, বড়দিন এবং বর্ষবরণের রাতে ফাটানো যাবে না পরিবেশবান্ধব বাজিও। জানাল কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) ডিভিশন বেঞ্চ। গত বছরও করোনা আবহে একই নির্দেশিকা বহাল রেখেছিল হাই কোর্ট।
রাজ্যের কোভিড গ্রাফ যথেষ্ট ঊর্ধ্বমুখী। রোজই প্রায় বাড়ছে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, দুর্গাপুজোর সময় সাধারণ মানুষের লাগামছাড়া মনোভাবই এর জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতিতে বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন রোশনি আলি নামে এক সমাজকর্মী। ওই মামলারই শুনানি ছিল শুক্রবার।
[আরও পড়ুন: T-20 বিশ্বকাপের মাঝে খাস কলকাতায় অনলাইন বেটিংচক্র, হোটেল থেকে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত]
এদিন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয়। বিচারপতিরা বলেন, “করোনা প্রতিদিন বাড়ছে। বাজি ফাটালে করোনায় আক্রান্ত যাঁরা, তাঁদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আরও বাড়তে পারে। পুলিশের পক্ষে পরিবেশবান্ধব বাজি চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। তাই রাজ্যে সমস্ত রকমের বাজি নিষিদ্ধ। দীপাবলি, ছটপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, বড়দিন এবং বর্ষবরণের রাতেও ফাটানো যাবে না বাজি (Cracker)। পরিবেশবান্ধব বাজিও ফাটানো যাবে না। বাজি বিক্রিও করা যাবে না। তার ফলে হয়তো ৩৩ লক্ষ বাজি বিক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তবুও জীবনের থেকে ব্যবসায়িক স্বার্থ বড় হতে পারে না।” এছাড়াও জানানো হয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কেউ বাজি ফাটাচ্ছে বা বিক্রি করছে কিনা, সেদিকে নজর রাখার দায়িত্ব পুলিশেরই। ব্যবহার করা যাবে প্রদীপ ও মোমবাতি।
উল্লেখ্য, জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টের রায়দানের আগেই শর্তসাপেক্ষে বাজি পোড়ানোর অনুমতি দেয় রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। দীপাবলিতে রাত ৮টা থেকে ১০টা এবং ছটপুজোয় সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বাজি পোড়ানো যাবে বলেই জানিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। পাশাপাশি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছিল, বড়দিন এবং বর্ষবরণের রাতে ১১ টা ৫৫ মিনিট থেকে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বাজি পোড়ানো যাবে। পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানোর কথাই বলা হয়েছিল। তবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট। এদিকে, হাই কোর্টের নির্দেশের পরই বেআইনিভাবে বাজি বিক্রি বন্ধে তৎপর পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে বিপুল পরিমাণ বাজি এবং বাজি তৈরির সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।