সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) নজিরবিহীন সংঘাতে জড়িয়েছেন দুই বিচারপতি। আর তাতে ‘লজ্জিত’ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। মঙ্গলবার এজলাস শেষ করে উঠে যাওয়ার সময় তিনি জানান, ”যা হয়েছে, তাতে আমি অত্যন্ত দুঃখিত এবং লজ্জিত। আদালতে এটা আশা করা যায় না।” তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এটা দেশের ঐতিহ্যশালী হাই কোর্ট। এই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি অনেক সাধারণ মানুষের উপর প্রভাব ফেলছে। আমরা এই সমস্যার সমাধান করার সবরকম চেষ্টা করছি।’’
ডাক্তারিতে ভর্তি নিয়ে দুর্নীতি মামলায় হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও বিচারপতি সৌমেন সেন নজিরবিহীন সংঘাত গোটা বিচারব্যবস্থাকেই স্তম্ভিত করে দিয়েছে। তা ভালোভাবে গ্রহণ করেনি সুপ্রিম কোর্টও (Supreme Court)। তাই হাই কোর্ট থেকে সেই মামলা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল দুর্নীতি মামলা এখন শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন। তবে এনিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তবে এবার তা নিয়ে মুখ খুললেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।
[আরও পড়ুন: কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতিদের সংঘাত, মেডিক্যাল মামলা নিজের হাতে নিল সুপ্রিম কোর্ট]
উল্লেখ্য, মেডিক্যালে সংরক্ষিত আসনে অসংরক্ষিত পড়ুয়া ভর্তির অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন এক ছাত্রী। এই মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডিকে(CID)। গত বুধবার এই মামলার শুনানিতে সিআইডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের মৌখিক আবেদনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। সে কথা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে জানান রাজ্যের আইনজীবী। বিচারপতি মামলার লাইভ স্ট্রিমিং অথবা স্থগিতাদেশের কপি দেখাতে বলেন। লিখিত স্থগিতাদেশের কপি দেখাতে পারেননি রাজ্যের আইনজীবী। কোনও মামলার কপি দেখাতে না পারলে কি তা গ্রহণযোগ্য, পালটা প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এর পরই সিবিআইকে বিচারপতি সমস্ত নথি নিয়ে তৎক্ষণাৎ এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
[আরও পড়ুন: ‘খুনে’র শাস্তি! ১০০ বছরের জন্য শিকলবন্দি গাছ! বাংলার কোথায় ঘটল এমন ঘটনা?]
দুই বিচারপতির এহেন বেনজির সংঘাতে শুক্রবার হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়। ওই বিশেষ বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু। গোটা প্রক্রিয়ায় তাঁরা স্থগিতাদেশ দেন।