গোবিন্দ রায়: একসময় রাজ্যের বিভিন্ন কলেজগুলিতে অধ্যাপকের অভাবে অতিথি অধ্যাপক নিয়েই কলেজের পঠনপাঠন সচল রাখতে কলেজ কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের নামজাদা কলেজগুলির সেই তালিকার বাইরে ছিল না। অতিথি অধ্যাপকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর ও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, কলেজগুলি আর নতুন করে অতিথি অধ্যাপক নিয়োগ করতে পারবেন না, তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অতিথি অধ্যাপক যদি নিয়োগ করতে হয় তাহলে অবশ্যই উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অনুমোদন নিতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষকে।
২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর একটি নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর। সেই নির্দেশিকায় সমস্ত অতিথি অধ্যাপক, যাঁরা এই সময়কালে কর্মরত রয়েছেন, তাঁদের চাকরির নিরাপত্তা এবং বেতন কাঠামো তৈরি করে প্রতিটি কলেজের প্রিন্সিপালকে নির্দেশ পাঠানো হয় যে তাঁদের নিজস্ব কলেজে কর্মরত অতিথি অধ্যাপকের নাম DPI বা ডাইরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন এডুকেশন ডিরেক্টরেট কাছে পাঠাতে হবে। যাতে বিভিন্ন কলেজের অতিথি অধ্যাপকরা ২০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকা বেতন পেতে পারেন এবং অবসরকালীন ৫ লক্ষ টাকা পেতে পারেন।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দু-সহ ৭ বিধায়কের সাসপেনশন মামলার সুরাহা হোক বিধানসভার বিধি মেনেই, পরামর্শ হাই কোর্টের]
মামলাকারী অধ্যাপক গোপাল অধিকারী ২০১৮ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের কলেজে অটোনমাস এডুকেশন বিভাগে অতিথি অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে, মামলাকারী গোপাল অধিকারী কর্মরত অবস্থায় থাকাকালীন উচ্চশিক্ষা দপ্তর ও নির্দেশিকা জারি করেছিল কিন্তু এই কলেজ কর্তৃপক্ষ তার নাম উচ্চশিক্ষা দপ্তরের পাঠাননি বলে অভিযোগ। অধ্যাপক গোপাল অধিকারী রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ বিষয়ে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তর কোনওরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি মেদিনীপুর কলেজ অটোনমাসের প্রিন্সিপাল এর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, আইন সঙ্গতভাবে ২৩ শে ডিসেম্বর ২০১৯ সালের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশিকা গোপাল অধিকারী সমস্ত সুযোগসুবিধা পাওয়ার অধিকারী এবং সরকারি অনুমোদিত অতিথি অধ্যাপক হিসেবেই সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। বিচারপতি কৌশিক চন্দ্র নির্দেশ দিয়েছেন, মামলাকারী অধ্যাপক গোপাল অধিকারী সরকারি নির্দেশিকা মেনে সমস্ত সুযোগসুবিধা থেকে কোনওভাবেই তাঁকে বঞ্চিত করা যাবে না। আগামী এক মাসের মধ্যে ডিপিআইকে নির্দেশ দেন বিষয়টি বিবেচনা করে মামলাকারীর প্রাপ্ত বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে।