গোবিন্দ রায়: বিচারব্যবস্থাকে নিশানা করে মন্তব্য করেছিলেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সোমবার সকালে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণের আরজি জানান দুই আইনজীবী। এদিন দুপুরে ওই মামলার আরজি খারিজ করলেন বিচারপতি। জরুরি ভিত্তিতে এই মামলার শুনানির কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলেই মত তাঁর।
সোমবার দুপুরে হলদিয়ার শ্রমিক সমাবেশে অভিষেকের ওই বক্তব্যের পেন ড্রাইভ আদালতে জমা দেন মামলাকারী সুস্মিতা সাহা দত্ত। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য তা শোনেন। এরপর বিচারপতি মামলাকারীর উদ্দেশে পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। তিনি বলেন, “বিচারপতিদের এক শতাংশ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? একজন সাংসদ বললেন মানেই তা ধরে নিতে হবে, তেমন নয়। কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তা বেশ অস্পষ্ট। আমার তো মনে হয় এড়িয়ে যাওয়াই উচিত।” এছাড়াও বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “কোনও ব্যক্তি কিছু বললেই মানহানি হয় না। প্রতিদিন কেউ না কেউ, কিছু না কিছু বলছেন। তা বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করতে পারে না। বিচারব্যবস্থার মান এতটা ঠুনকো নয়। জনপ্রতিনিধিদের এই ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত। তবে এখনই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।”
[আরও পড়ুন: বড়সড় স্বস্তি, সীতার পাতাল প্রবেশ নিয়ে মন্তব্যে ত্রিপুরা আদালতে জামিন পেলেন কুণাল ঘোষ]
উল্লেখ্য, গত শনিবার হলদিয়ায় (Haldia) শ্রমিক সমাবেশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারব্যবস্থার দিকে আঙুল তোলেন। তিনি বলেন, “আমার বলতে লজ্জা লাগে বিচারব্যবস্থায় ১-২ জন এমন আছেন, যাঁরা সম্পূর্ণ যোগসাজশে তল্পিবাহক হিসাবে কাজ করছেন। তারা ১ শতাংশ হবে। কিছু হলেই সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। খুনের মামলায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে। শুনেছেন কোনওদিন? আদালত নিরাপত্তা দিতে পারে। অধিকার আছে। তা বলে স্থগিতাদেশ? আপনার যদি মনে হয় সত্যি কথা বলার জন্য ব্যবস্থা নেবেন তো নিতে পারেন। আমার তাতে কিছু যায় আসে না। ক্যামেরার সামনে সত্যি কথা ২ হাজার বার বলব। ১০ হাজার বার বলব। সত্যি বলতে আমার বিবেকে বাধে না।”
রবিবার শিলিগুড়িতে দাঁড়িয়ে অভিষেকের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। নাম না করে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে ‘সীমা লঙ্ঘনের’ অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে মুখ্যসচিবকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন। পালটা টুইটে রাজ্যপালকে তোপও দাগেন অভিষেক। “কে সীমা লঙ্ঘন করছে, তা বাংলার মানুষ বুঝতে পারছেন”, বলেই টুইটে উল্লেখ করেন তৃণমূল সাংসদ। হাই কোর্টে অভিষেকের মামলার আরজি খারিজ হয়ে গিয়েছে ঠিকই। তবে আগামী ৬ জুনের মধ্যে মুখ্যসচিবকে সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল।