গোবিন্দ রায়: অভিযোগ গুরুতর। মাদক পাচারের মতো অভিযোগ। তার থেকেও গুরুতর বিষয়, এক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে মিথ্যে মাদক মামলায় ফাঁসানোর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। আর সেই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো ও হয়রানির জেরে এবার ডায়মন্ড হারবারের তৎকালীন পুলিশের সুপার কোটেশ্বর রাও, বিধাননগর পুলিশের কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ সুপার সঞ্জীব দে-সহ ৯ পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে সিআইডি (CID) তদন্তের নির্দেশে দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ওই তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। আগামী ছয় মাসের মধ্যে সিআইডিকে ওই তদন্ত শেষ করতে হবে। অন্যথায় তদন্তকারী সংস্থা পরিবর্তনের বিষয়ও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: কোচবিহারে BJP প্রার্থীর আত্মীয়কে কুপিয়ে খুন, ‘রাজনীতির যোগ নেই’, দাবি অভিযুক্ত তৃণমূলের]
পিন্টু মণ্ডল নামে আরামবাগের এক বাসিন্দাকে রাজনৈতিক কারণে বেআইনি মাদক পাচার মামলায় ফাঁসানো হয় বলে অভিযোগ। মামলাকারির আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য, অভিলাষ চট্টোপাধ্যায়রা জানান, নভেম্বর ২০১৭ থেকে মার্চ ২০১৯ সালের মধ্যে পিন্টুর বিরুদ্ধে নিউ টাউন, বিষ্ণুপুর-সহ একাধিক থানায় ১০টি মাদক পাচার ও নানান অভিযোগ দায়ের হয়। প্রায় সবক’টি অভিযোগ থেকে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের মে মাসে তেলেঙ্গানার একটি বেসরকারি ফিল্ম স্টুডিওতে শুটিং-এ ব্যস্ত ছিলেন। ওই সময় স্থানীয় পুলিশের সাহায্যে নিউটাউন থানার একটি যৌথ দল হানা দিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাকে কলকাতায় আনার পর জানা যায় নিউ টাউন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ায় পুলিশের তদন্ত শুরু করেছে। কলকাতায় নিয়ে আসার মাঝেই পারুলিয়া কোস্টাল থানায় আরও একটি অভিযোগ জমা পড়ে। পুলিশের দাবি, ওই মামলায় অভিযুক্তদের বয়ান এবং কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে এই গ্রেপ্তার।
আইনজীবীরা আরও জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া কোস্টাল পুলিশ থানা এই ঘটনার তদন্ত করে। ২০১৮ সালের সেই অভিযোগের নিস্পত্তি করে আলিপুর আদালত পিন্টুকে বেকসুরে খালাস করে। পরে ওই ঘটনায় তাঁকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে ওই পুলিশের কর্তাদের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ পিন্টু। সেই মামলার নিস্পত্তি করে আদালত পুলিশ কর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।