শুভঙ্কর বসু: কেন্দ্র ও রাজ্য। দুই সরকারের রাজনৈতিক মতের পার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু সেজন্য পরিযায়ী শ্রমিকরা বঞ্চিত হবেন কেন? লকডাউন চলাকালীন মালদহে দু’লক্ষেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এলেও তারা কেন্দ্রীয় সরকারের ‘গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান’ যোজনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এই অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতেই দুই সরকারকে উদ্দেশ্য করে ওই মন্তব্য করেছেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
মামলাকারী মোস্তাক আলমের অভিযোগ, চলতি বছরের মে মাসের আগে পর্যন্ত মালদহে (Maldah) ২৫ হাজারেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এসেছেন। কিন্তু ‘গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযান’ যোজনা প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়েছে এই জেলা। এদিন শুনানিতে মামলাকারীর তরফে জেলায় ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম, ফোন নম্বর ও ঠিকানা–সহ সমস্ত তথ্য তুলে ধরা হয়। কেন্দ্রের তরফে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর। তিনিই এই প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেন। এদিকে, মামলার আগের দুই শুনানিতে রাজ্যের তরফে কোনও আইনজীবী উপস্থিত না থাকলেও এদিন তাতে অংশ নেন অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদার। আগের দু’টি শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকায় কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ।
[আরও পড়ুন: ‘আজ মানুষ ভেঙেছে, পরে কুকুর-ছাগলে ভাঙবে’, কনভয়ে হামলায় দিলীপকে বেনজির তোপ অনুব্রতর]
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চ এরপর শুনানিতে মন্তব্য করে, ‘‘এই ধরনের প্রকল্পের সুবিধা দিতে সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। কোনও পরিযায়ী শ্রমিককে প্রকল্পের সুবিধা পেতে কেন সরকারের দ্বারস্থ হতে হবে। কোন জেলায় কত পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন, তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকারেরই। অথচ মালদা জেলায় দু়’লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ফিরে এলেও রাজ্যের কাছে কোনও তথ্য নেই। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’
[আরও পড়ুন: করোনা কালে বাজেটে কাটছাঁট, ‘ব্রাত্য’ ডাকিনী-যোগিনী, কমল ৪০ ফুটের কালীর উচ্চতাও]
এরপরই অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ও অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলকে আদালতের নির্দেশ, নভেম্বরের মধ্যে মালদহের পরিযায়ী শ্রমিকদের এই প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করা যায় কি না অতি সত্বর তা দেখতে হবে। ২০ তারিখ ফের মামলার শুনানি। তার আগে এই সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তথ্য রাজ্যকে জমা দিতে হবে।