গোবিন্দ রায়: নরেন্দ্রপুরে স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের মারধরের ঘটনায় পুলিশকে তুমুল ভর্ৎসনা আদালতের। কোর্টের নির্দেশ সত্বেও কেন কাউকে গ্রেপ্তার করা হল না, প্রশ্ন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। পুলিশকে তাঁর প্রশ্ন, ‘এতোদিন চোখে কাপড় বেঁধেছিলেন?” গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে দুপুর ২টোর মধ্যে বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপারের রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি। শুনানি চলাকালীন ভারচুয়ালি উপস্থিত থাকতে হবে তাঁকে। আইসিকেও হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। বেলা ২টোয় মামলার পরবর্তী শুনানি। তবে এই রিপোর্টে আদালত সন্তুষ্ট না হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন বিচারপতি বসু।
নরেন্দ্রপুরের স্কুলে গন্ডগোলের ঘটনায় পুলিশকে ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিল হাই কার্ট। নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সোমবার রাতের মধ্যেই গ্রেপ্তার করতে হবে প্রধান শিক্ষক-সহ এফআইআরে নাম থাকা সমস্ত অভিযুক্তকে। কিন্তু ডেডলাইন পেরিয়ে গেলেও এফআইআরে নাম থাকা কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। মঙ্গলবারের শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, কালকের নির্দেশের পর থেকে ৩-৪ জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। কাউকে পাওয়া যায়নি। কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। পালটা বিচারপতি বসুর প্রশ্ন, “পঞ্চায়েত সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন না? এটা কীভাবে সম্ভব? সুপারকে বলুন অবিলম্বে বিষয়টি দেখতে। তাঁকে তো আমি ব্যক্তিগতভাবে এটা দেখতে বলেছিলাম।” সঙ্গে আদালতের নির্দেশ, বিষয়টির সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক নেতাদের আগে গ্রেপ্তার করুন। কোনও রকম রাজনৈতিক চাপ থাকলে ওই নেতার আজ খুব খারাপ দিন হবে। মাধ্যমিকের আগেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করুন।” এর পরই পুলিশের রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি। সেই রিপোর্টে সন্তুষ্ট না হলে পুলিশের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি বসু।
[আরও পড়ুন: বজরংবলীর পতাকা নামানো নিয়ে উত্তেজনা, ক্ষমতাসীন কংগ্রেসকে ‘হিন্দু বিরোধী’ তোপ বিজেপির]
শনিবার নরেন্দ্রপুরের বলরামপুর মন্মথনাথ বিদ্যামন্দিরে হানা দেয় ৫০-৬০ জনের একটি দল। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, স্কুলের টির্চাস রুমে ঢুকে শিক্ষক শিক্ষিকারদের মারধর করা হচ্ছে। ভাঙা হয়েছে মোবাইল। মেঝেয় ছড়িয়ে কাগজপত্র। শিক্ষিকাদের কাঁদতেও দেখা গিয়েছে। স্কুলের ভিতরে কার্যত আটকে পড়েন তাঁরা। শেষপর্যন্ত নরেন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।