গোবিন্দ রায়: চাষের জমি রাতারাতি পরিণত হচ্ছে মাছের ভেড়িতে! এমন ঘটনার নমুনা পেয়ে তাজ্জব কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। এই সংক্রান্ত মামলায় আগেই একবার পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসককে সরোজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। আর এবার একই ইস্যুতে দায়ের হওয়া মামলায় পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করল হাই কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ। একই সঙ্গে, জমির চরিত্র পরিবর্তনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছেন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী। আপাতত জমির যে ধরন, তার কোনওরূপ অবস্থার পরিবর্তন করা যাবে না। স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। হাই কোর্টের রেগুলার বেঞ্চে মামলার পরবর্তী শুনানি।
পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার নৈছনপুরে ধানের জমি ও পানের বরজ দখল করে মাছের ভেড়ি বানানোর অভিযোগ উঠেছে। ১২৩-১২৫ বিঘা জমি বেআইনিভাবে দখলের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মণ্টু জানা, বানেশ্বর জানা-সহ প্রায় শতাধিক চাষি। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলায় মামলাকারিদের অভিযোগ, বিঘে বিঘে উর্বর ধান এবং পানের বরোজের জমি জবরদখল করে মাছের ভেড়ি বানানো হচ্ছে কৃষক পরিবারগুলি বারবার স্থানীয় বিধায়ক এবং প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও তাঁরা কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: আগামী বছর মাধ্যমিক শুরু ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে, দেখে নিন ২০২৩-এর পরীক্ষাসূচি]
চাষিদের প্রশ্ন, প্রশাসনের উদাসীনতা নাকি এলাকার মাতব্বরের দাদাগিরি? কোনওভাবেই কৃষি জমিতে বেআইনিভাবে মাছের ভেড়ি (Fishery) আটকানো হচ্ছে না কেন? গত দু’বছর ধরে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় চাষের জমির মাঝেই তৈরি হয়েছে মাছের ভেড়ি। এতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। ভেড়ি তৈরিতে চাষিরা আপত্তি করলে তাঁদের ভয় দেখানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘প্রত্যেক মসজিদে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব খোঁজার দরকার কী?’, জ্ঞানবাপী বিতর্কে উলটো সুর RSSপ্রধানের]
এর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং বিধানসভার রামভদ্রপুর, সারতা সহ একাধিক এলাকায় চাষ যোগ্য ধানিজমি দখল করে রাতারাতি কয়েকশো বিঘে জমিতে ড্রেসিং মেশিন দিয়ে গর্ত করে জমি নষ্ট করে দেওয়ার প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে বলে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তুলসী পাল-সহ ১২১ জন চাষি। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, “চাষিরাই দেশের সম্পদ। তাঁদের জমি দখল তো দূরের কথা, তাঁদের উপর কোনও বাহুবলীর হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না।”