গোবিন্দ রায়: তিন বছরের স্নাতক কোর্সে কোনও পরীক্ষার্থী যদি অকৃতকার্য হন বা ওই সময়ের মধ্যে কোর্স শেষ করতে না পারেন, তাহলে কোর্সের মেয়াদ শেষের পরও তিনি অতিরিক্ত দু’বছর সুযোগ পাবেন। সম্প্রতি এক পরীক্ষার্থীকে স্নাতক পরীক্ষায় বসার সুযোগ না দেওয়া সংক্রান্ত মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) নিয়ম মনে করিয়ে দিয়ে, অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)।
ওই পরীক্ষার্থী মালদহের (Maldah) গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। তাঁকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দিতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য। আদালতের পর্যবেক্ষণ, শিক্ষা নাগরিকের মৌলিক অধিকার, তা থেকে বঞ্চিত করা যায় না। মামলাকারীর আইনজীবী সুমন বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনিন্দ্য বসু জানান, জনৈক ছাত্রী দীপিকা সরকার ২০১৭ সালে গৌড় মহাবিদ্যালয়ে স্নাতক সাধারণ কোর্সে ভরতি হন। ২০১৮ সালে প্রথম বর্ষে উত্তীর্ণ হন মামলাকারী। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় ইতিহাস বিভাগে অনুর্ত্তীণ হন তিনি। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে তৃতীয় বর্ষে সব বিষয়েই পাশ করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘চক্রান্ত করে কেকে’কে মেরে ফেলা হয়েছে’, বিস্ফোরক দিলীপ, পালটা দিল তৃণমূল]
অভিযোগ, দ্বিতীয় বর্ষে সাপ্লি থাকা পরীক্ষায় পাস করার জন্য এক বছরই সুযোগ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। পরের বছর করোনার কারণে তিনি সাপ্লিমেন্টারি (Supplimentary) পরীক্ষা দিতে পারেননি। পরে তাঁকে আর ফেল করা বিষয়ের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ফলে শুধু ইতিহাসের একটি পেপারের কারণে ওই ছাত্রীর স্নাতক হওয়া আটকে যায়। আটকে যায় তাঁর উচ্চশিক্ষার রাস্তা। বাধ্য হয়ে ছাত্রীটি আদালতের দ্বারস্থ হন।
মামলা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য, যে বছর তিনি ওই বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন, তারপর থেকে পর দু’বছরের মধ্যে পরীক্ষায় বসে পাস করতে হবে। সেই সুযোগ তাঁকে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাঁর পরীক্ষায় বসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে সে কারণেই তাঁকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি।
[আরও পড়ুন: হায় রে কুসংস্কার! সাপের কামড়ে মৃত নাবালিকার প্রাণ ফেরাতে দেহ ভেলায় ভাসাল পরিবার]
কিন্তু মামলাকারীর আইনজীবীদের দাবি, “ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী যে বছর তিনি অকৃতকার্য হয়েছেন সেই সময় থেকে নয়, তাঁর তিন বছরের মেয়াদ শেষের পর থেকে অতিরিক্ত দু’বছর ধরা হয়। সেই অনুযায়ী পরীক্ষায় বসার সুযোগ থাকলেও ছাত্রীটিকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি।” আবেদনকারীর বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে তাঁকে পরীক্ষায় বসার ইচ্ছায় সায় দেয় আদালত। হাই কোর্টের নির্দেশ পেয়ে ওই ছাত্রীর জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করে গৌড়বঙ্গ কর্তৃপক্ষ। গত ২৬ মে পরীক্ষাও দিয়েছেন দীপিকা।