গোবিন্দ রায়: রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে মহিলা বন্দির অন্ত্বসত্ত্বা হওয়া নিয়ে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। দিন কয়েক আগে রাজ্যের সংশোধনাগারে মহিলা বন্দিদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়া নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট দিয়েছিল আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ। এবার তা নিয়ে রাজ্যের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও গৌরাঙ্গ কাথঁয়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ কিছুদিন আগে একটি রিপোর্টে দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গের মহিলা সংশোধনাগারগুলিতে ১৯৬টি শিশুর জন্ম দিয়েছেন বন্দি মহিলারা৷ যা নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন তৈরি হয়ে যায়। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট সব রাজ্যের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে। এবার রাজ্যের সংশোধনাগারের তথ্য চাইল কলকাতা হাই কোর্ট।
[আরও পড়ুন: যাবে না চাকরি, বরং তৈরি হবে নতুন সুযোগ, কৃত্রিম মেধার প্রসার নিয়ে দাবি IBM কর্তার]
ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, এই মামলায় সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করতে হবে। জেলগুলিতে বাড়তি বন্দির ভিড়, মহিলা বন্দিদের স্বাস্থ্য, জেলে বন্দি মৃত্যু, অসুস্থ বন্দিদের মুক্তি-সহ নানা বিষয়ে সহমতের ভিত্তিতে একটা রূপরেখা তৈরির পর রিপোর্ট দেবে রাজ্য। ৮ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি। তার মধ্যে ওই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “এই ধরনের অভিযোগ উঠলে সমাজে কী প্রভাব পড়তে পারে সেটা আমরা জানি। এটা মহিলাদের কালিমালিপ্ত করার চরম পথ। এমনিতেই তাঁরা অভিযুক্ত হয়ে জেলে।” আদালতের আরও মত, “এই অবস্থায় এমন অভিযোগ তাদের আরও বেশি কলঙ্কিত করতে পারে। এটা দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যাক্তিদের আরও বেশি করে মাথায় রাখা জরুরি।”
[আরও পড়ুন: চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচন: বিরোধীদের ‘বাতিল’ ভোটও বৈধ, পুনর্গণনার সুপ্রিম নির্দেশে ধাক্কা বিজেপির]
এদিন মামলার শুনানিতে আদালত বান্ধব তাপস ভঞ্জ বলেন, “সব জেলে মহিলা বন্দিদের নিজেদের এনক্লোজারে যেতে হলে মূল গেট দিয়ে ঢুকে পুরুষ বন্দিদের সেলের সামনে দিয়ে অনেকটা রাস্তা যেতে হয়। রাতে কোর্ট থেকে নিয়ে যাওয়ার পর বন্দিরা ওই জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময় পুরুষ বন্দিরা হায়নার মতো আচরণ করে।” তিনি জানান, “নিয়মিত প্রেগনেন্সি টেস্ট জরুরি।” কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন নাকচ করে বলে, “একেবারেই নয়। কেউ স্বেচ্ছায় চাইলেন বা কোনও অভিযোগের ভিত্তিতে কিছু করতে হলো, সেটা আলাদা কথা। কিন্তু কোর্ট কোনওভাবে এমন টেস্ট করার ব্যাপারে অনুমতি দেবে না।” বিচারপতি বাগচি বলেন, “কিছু সমস্যা আছে আমরা সবটা মানছি। কিন্তু সেটা নিয়ে আলোচনা করুন। আপনার পরামর্শ দিন রাজ্যকে। পুরুষ ও মহিলা বন্দিদের আলাদা পথ করা যায় কিনা দেখব”