গোবিন্দ রায়: বিরাশি বছরের এক বৃদ্ধকে বাড়িছাড়া করার অভিযোগ তাঁর আইনজীবী বউমার বিরুদ্ধে। অথচ পুলিশ তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করে উলটে ওই মহিলা আইনজীবীর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর রুজু করল! মামলায় পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে এফআইআর ও চার্জশিট খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের মন্তব্য, “পুলিশ তার দায়িত্ব নিরপেক্ষতার সঙ্গে পালন করেনি। শুধুমাত্র মহিলা আইনজীবী বলে, প্রাথমিক অনুসন্ধান না করেই তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এফআইআর করে চার্জশিট জমা দিয়েছিল।” মামলাকারীর আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানান, সোনারপুরের বাসিন্দা অনুপম সর্দার ও তার স্ত্রী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মী। বাড়িতে দাদা বৌদি, ছোট বোন এবং ৮২ বছর বয়সী বৃদ্ধ মা। অভিযোগ, পারিবারিক সম্পত্তি বিবাদের জেরে দাদা ও বৌদি অনুপমবাবুর পরিবার ও তাঁর বৃদ্ধ মা এবং ছোট বোনকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করে। এ বিষয়ে তিনি একাধিকবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাবি মামলাকারীর।
[আরও পড়ুন: ‘জমি নিয়ে থাকলে ফেরত দিন’, সন্দেশখালি গিয়ে অভিষেকের বার্তা শোনালেন সেচমন্ত্রী]
উল্টে তাঁর ৮২ বছরের বৃদ্ধা শাশুড়ি-সহ পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহিলা আইনজীবী। শুধুমাত্র আইনজীবী হওয়ায় বারুইপুর থানার পুলিশ কোনও অনুসন্ধান না করেই এফআইআর করেছে। শুধু তাই নয়, আরও অভিযোগ, কোনওরকম তদন্ত না করেই থানার মধ্যেই সাক্ষী নিয়ে চার্জশিট ফাইল করে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে মামলা গড়ায় হাই কোর্টে।
[আরও পড়ুন: কবে কার্যকর হবে নয়া দণ্ডসংহিতা আইন? লোকসভার আগে বড়সড় ঘোষণা কেন্দ্রের]
মামলার কেস ডাইরি দেখেই বিচারপতি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে অভিযোগকারীকে মারধর করার যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেখানে তার কোন শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। সেখানকার কোনও সাক্ষী নেই! অথচ আবেদনকারীর বৃদ্ধ মা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন অভিযোগকারী ও তার স্বামী বাড়ি দখল করে তার বৃদ্ধা মাকে বাড়িছাড়া করল, পুলিশ সেখানে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করল না। পুলিশের ভূমিকা আশ্চর্যজনক!