কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: রবিবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (Primary Teacher Recruitment Examination) হতে চলেছে রাজ্য জুড়ে। করোনা আবহে (Corona Pandemic) দীর্ঘ দশ মাসের মতো সময় থমকে ছিল পরীক্ষা প্রক্রিয়া। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সম্ভবত এটাই শেষ বড় পরীক্ষা হতে চলেছে, যেখানে প্রায় আড়াই লক্ষেরও বেশি প্রার্থীর ভাগ্য নির্ণয় হতে চলেছে।আর সেই পরীক্ষার আগেই বড়সড় ঘোষণা কলকাতা হাই কোর্টের। ৩১ জানুয়ারির প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় মামলাকারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পরীক্ষার্থীদেরও বসার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
২০১৭ সালের মে মাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সে বছরই টেট আয়োজনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। গত তিন বছরেও তা আয়োজন করে উঠতে পারেনি পর্ষদ। পুরনো বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, টেট সংগঠিত করতে গত বছরের ডিসেম্বরে ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করে পর্ষদ। সেই অনুযায়ী আগামী ৩১ জানুয়ারি পরীক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু ওই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে ইমনা চৌধুরি-সহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, যাঁরা ২০১৭ সালের পর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়েছেন তাদেরও টেটে বসার সুযোগ দিতে হবে। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির পর মামলাকারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীদের দাবিকে মান্যতা দিয়েছেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। এদিন সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি ভরদ্বাজের নির্দেশ, মামলাকারী প্রার্থীরা যাতে পরীক্ষায় বসতে পারেন তাই ২৯ জানুয়ারি বেলা পাঁচটা পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে। মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পরীক্ষায় বসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীরা। এদিন হাইকোর্টের নির্দেশে তাদের দাবি মান্যতা পেল।”
[আরও পড়ুন: এবার বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বহিষ্কৃত তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া? তুঙ্গে জল্পনা]
এদিকে, এই পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে পর্ষদ। পরীক্ষার্থীরা তো বটেই, পরিদর্শকদেরও মোবাইল সংক্রান্ত বিধিনিষেধের আওতার মধ্যে থাকতে হবে। এর পাশাপাশি পরীক্ষার্থীদের জন্য বেশ কয়েকটি নিয়ম জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে ঢুকতে পারবেন না তাঁরা। এছাড়া ক্যালকুলেটর বা কোনও রকম ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না। যদি কারও কাছে এরকম কোনও জিনিস পাওয়া যায় তাহলে তাঁর পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়ার উল্লেখও রয়েছে নির্দেশিকাতে। এছাড়া কোনও ধরনের ব্যাগ নিয়েও প্রবেশ নিষেধ কেন্দ্রে। কালো কালির বল পয়েন্ট পেন দিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।
[আরও পড়ুন: ‘আমাকে কী শেখাবে, আমি ওদের কান ধরে হিন্দি শেখাব’, মোদিকে খোঁচা মমতার]
পর্ষদের জারি করা নির্দেশিকায় এটাও বলা হয়েছে, পরীক্ষা কেন্দ্রে কম করে এক ঘণ্টা আগে ঢুকতে হবে পরীক্ষার্থীদের। যদিও এই নিয়ম সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। বিশেষ করে যাঁরা পরীক্ষাকেন্দ্রের দূরে থাকেন তাঁদের বক্তব্য, কোভিড পরিস্থিতিতে যানবাহনের সংখ্যা অপ্রতুল। ফলে দূরের পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়তে পারেন। এইসব ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিলের দাবি তুলেছেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ।