ধীমান রায়, কাটোয়া: একটি বাছুর, দু’টি মাথা। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া (Katwa) থানার মূলগ্রামে এমনই অদ্ভূতদর্শন বাছুরের জন্ম হয়েছে দিন তিনেক আগে। দু’টি মাথা নিয়ে দিব্যি সুস্থই রয়েছে প্রাণীটি। দু’টি মুখে দুধও খাচ্ছে। আর এই দুই মাথাওয়ালা বাছুর (Calf) দেখতে দূরদূরান্তের মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন মূলগ্রামের গোপালক সোমনাথ মাজির বাড়িতে। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ভাইরাল (Viral) তার ছবি।
কাটোয়ার মূলগ্রামের মাঠপাড়ার বাসিন্দা সোমনাথ মাঝি। পেশায় জনমজুর। গোপালনও করেন। সোমনাথের বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী মাধু মাঝি দুই ছেলে। জানা গিয়েছে, সোমনাথ মাজিদের বাড়িতে রয়েছে একটি গাভী। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই গাভীর পরিচর্যা করেন। যা দুধ দেয় কিছুটা বাড়িতে রেখে বাকিটা বিক্রি করেন। স্ত্রী মাধুদেবী জানান এই গাভীটির এর আগেও তিনটি বাছুর হয়েছিল। মঙ্গলবার চতুর্থ সন্তানের জন্ম দেয় গাভীটি।
[আরও পড়ুন: কম খরচে ‘ব্লকবাস্টার’ চন্দ্রযান, ৭০০ কোটিতেও ডাহা ফেল! শিক্ষা নিন’ কটাক্ষের শিকার ‘আদিপুরুষ’]
সোমনাথবাবু জানান, রাত তখন ১ টা। তার গরুটি প্রসব বেদনায় চিৎকার শুরু করলে স্বামী-স্ত্রী ঘর থেকে গোয়ালে চলে আসেন। সোমনাথ মাজির কথায়, “এর আগেও যখন আমাদের গরুটির বাচ্ছা হয়েছিল তখন আমরা স্বামী-স্ত্রী মিলে প্রসব করিয়েছিলাম। কিন্তু এবার দেখছিলাম প্রসবের সময় ভীষণ সমস্যা হচ্ছিল। তাই দুজন অভিজ্ঞকে ডেকে আনি। তারপর দেখি দুটি মাথা নিয়ে একটি বাছুর জন্ম নিল।” সোমনাথবাবুর বাড়িতে এমন আজব দর্শন বাছুরের জন্ম নেওয়ার ঘটনার কথা সকাল থেকেই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রচুর মানুষ বাছুরটি দেখতে সোমনাথ বাবুর বাড়িতে ভিড় জমান ৷ অনেকেই মোবাইলে ছবি তোলেন।
[আরও পড়ুন: যাদবপুর কাণ্ডের মাঝে ফের অঘটন, দুর্গাপুরে হস্টেল থেকে উদ্ধার ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ]
তবে জানা গিয়েছে, সদ্যোজাত বাছুরটি এখন কিছুটা অসুস্থ। মাঝেমধ্যে ধরে দুধ খাইয়ে দিতে হচ্ছে। তার চিকিৎসাও চলছে। গাভীটিকে স্যালাইন (Saline) দেওয়া হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ বিকাশ বিভাগের কাটোয়া ২ ব্লক আধিকারিক ডা: জয়কিঙ্কর মান্না বলেন, “এই ধরনের ঘটনা আসলে জেনেটিক ডিসঅর্ডারের কারণে হয়। পশুচিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে পলিসেফালি বা বাইসেফালি। গর্ভধারনের প্রাথমিক পর্যায়ে ভ্রুণের আংশিক বিভাজন হয়ে গিয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।” বিশেষজ্ঞরা জানান, তবে এই বাইসেফালিক বা পলিসেফালিক বা দু’মাথাওয়ালা বাছুর অধিকাংশ ক্ষেত্রে কয়েক ঘন্টা বাঁচে। এই বাছুরটি তিনদিন বেঁচে থাকা কিছুটা আর্শ্চর্যের।