সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ”আমরা যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমাদের ফুটবল টিমকে অনুপ্রাণিত করতে পারি, তার চেয়ে ভাল কিছু আর হবে না। আমরা যদি ফাইনালে জিততে পারি ইংল্যান্ডের ফুটবল টিম সেই জয় থেকে বিশ্বকাপের আগে অনুপ্রেরণা নিতে পারবে। আমাদের দেশে খেলাধুলোর একটা সংস্কৃতি আছে। আমরা যে যা খেলাই খেলি না কেন, একে অন্যের পাশে থাকি। সঙ্গে থাকি। সমর্থন করি।”
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের (ICC T-20 World Cup) আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে কথাগুলো বলেছিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার। গত রবিবার ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বিশ্বজয় করেছিল বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড-বাহিনী।
[আরও পড়ুন: গর্বের প্রাপ্তি! মাদ্রিদের বিখ্যাত ফুটবল মিউজিয়ামে মারাদোনার পাশে জায়গা পেয়েছে এক বাঙালির জার্সিও]
সোমবার কাতার বিশ্বকাপে (Qatar World Cup 2022) নামছে ইংল্যান্ড (England)। হ্যারি কেনদের প্রতিপক্ষ ইরান। বাটলারের ইংল্যান্ড বিশ্বজয় করে ফেলেছে। সেই জয় কতটা অনুপ্রাণিত করবে ফিল ফোডেনদের? প্রশ্নটা করা হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যানকে (Trevor James Morgan)। পারথ থেকে সাহেব কোচ সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে বললেন, ”টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জয় ইংল্যান্ডকে কাতারে অনুপ্রাণিত করবে এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব, দুটো দু’ ধরনের খেলা, খেলোয়াড়রাও দু’ ধরনের। ক্রিকেট ও ফুটবল খেলাটা ভিন্ন। খেলোয়াড়রাও ভিন্ন। একটার সঙ্গে আরেকটার কোনও মিলই নেই। ইংল্যান্ড যদি শেষ চারে পৌঁছয় এবং ভাল ড্র পায় তাহলে ফাইনালে যেতেও পারে। ফাইনালে যে কোনও রেজাল্টই হতে পারে। সবসময়ে ভাল দলটাই যে ফাইনালে জেতে এমনটা সবসময়ে হয় না।”
ইংল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরেই ট্রফি বুভুক্ষু। ইউরো কাপের ফাইনালে উঠেও ইংল্যান্ড ট্রফি জিততে পারেনি। এবারও অনেক স্বপ্ন নিয়ে কাতার গিয়েছে ইংল্যান্ড। নিন্দুকেরা বলে থাকেন পল গাসকোয়েনের পরে ইংল্যান্ড সেভাবে তারকা তৈরি করতে পারেনি। তবে তা তর্কের বিষয়। হ্যারি কেনের দল যদি কাতার থেকে বিশ্বকাপ নিয়ে যেতে পারে দেশে, তাহলে ইংল্যান্ড দলকে ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড আর্থিক বোনাস দেওয়া হবে। প্রতিটি প্লেয়ার পাবেন পাঁচ লক্ষ পাউন্ড। ম্যাচের আগেই বিশাল আর্থিক পুরষ্কার ঘোষণা।
অন্যদিকে ইরানে পরিবর্তনের হাওয়া। সেদেশে বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহের সূত্রপাত বছর বাইশের মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে। নীতি পুলিশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে। অভিযোগ, পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি ওই তরুণীকে মারধর করা হয়নি। গ্রেপ্তারের পরে অসুস্থ হন তিনি। আক্রান্ত হন হৃদরোগে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই শুরু হয় আন্দোলন। রাজপথে নেমে আসে কাতারে কাতারে মানুষ।
হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের শিকলবন্দি করার প্রতিবাদ করা শুরু হয়। কেবল মহিলারাই নন, প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন পুরুষরাও। যদিও দেশজুড়ে প্রবল বিক্ষোভ, আন্দোলনের পরেও থামছে না ইরান সরকার। বিক্ষোভকারীদের থামানোর জন্য আরও কড়া হচ্ছে সে দেশের সরকার। কিন্তু তাতেও যে আন্দোলনের আঁচ কমার এতটুকু চিহ্ন নেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে প্রতিনিয়তই। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়তে পারেন, এমন আশঙ্কা মাথায় নিয়েও প্রতিবাদীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ইরানের ফুটবলার সর্দার আজমৌন। এরকম রাজনৈতিক পটভূমিতে ইরান খেলতে নামছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
দিনের শুরু দেখে বোঝা যায় গোটা দিনটা কেমন যাবে। ইংল্যান্ড-ইরান ম্যাচও সেই দিকনির্দেশ করবে বলেই মনে করেন ফুটবলভক্তরা। ক্রিকেটের মতোই ফুটবলেও কি বিশ্বজয় করতে পারবে ইংল্যান্ড? উত্তর দেবে সময়।