সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election) ঠিক আগে দেশজুড়ে কার্যকর হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ (CAA)। সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদও। এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে এই আইন তিনি আটকাবেন। কারও নাগরিকত্ব বাতিল করতে দেবেন না। একই সূত্রে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনও (MK Stalin) জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর রাজ্যেও সিএএ কার্যকর হবে না। কিন্তু প্রশ্ন হল রাজ্য সরকার চাইলেই কি কেন্দ্রীয় এই আইন রুখতে পারে?
পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতেই আনা হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হলেও বিধি নিয়ে জট থাকায় তা এতদিন বলবৎ করা যায়নি। সোম সন্ধ্যায় গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে অবশেষে তা কার্যকরী করেছে কেন্দ্রের মোদি (Narendra Modi) সরকার। ১৯৫৫-র নাগরিকত্ব আইনের সঙ্গে সিএএ-র ফারাক উসকে দিয়েছে বিতর্ক। ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে কোনও ধর্মের উল্লেখ ছিল না। ২০১৯ সালে কেন্দ্র সরকার যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ করিয়েছে তাতে স্পষ্টত ধর্মের উল্লেখ আছে। আর সেটাতেই আপত্তি মমতা-সহ বিরোধীদের। কিন্তু মমতা চাইলেই রাজ্যে কি আটকানো যায় CAA?
[আরও পড়ুন: মাদক পাচারের ঘাঁটি গুজরাট বন্দর! এবার বাজেয়াপ্ত ৪৫০ কোটির ড্রাগস, গ্রেপ্তার ৬ পাকিস্তানি]
সংবিধান বলছে, রাজ্য সরকার চাইলেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আটকাতে পারবে না। কারণ সংবিধানের সপ্তম তফসিল অনুযায়ী, নাগরিকত্ব সম্পর্কিত আইন বদল, সংশোধন বা বলবত করার অধিকার শুধু কেন্দ্রের হাতে ন্যস্ত। রাজ্য সরকার তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। শুধু তাই নয়, সংবিধানের ২৪৬ নং অনুচ্ছেদ বলছে নাগরিকত্ব সম্পর্কিত আইন প্রণয়নের অধিকার শুধু সংসদের আছে। কোনও রাজ্য বিধানসভার নেই। অর্থাৎ রাজ্য সরকার যদি ভেবে থাকে রাজ্য বিধানসভায় পালটা আইন এনে CAA অকার্যকর করে দেওয়া হবে, সেটাও সম্ভব নয়। এই আইন পাশের পর কয়েকটি রাজ্যে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছিল। সেটাও অর্থহীন।
[আরও পড়ুন: ‘কারও নাগরিকত্ব যাবে না’, CAA সমর্থন করে মুসলিমদের বার্তা জামাত প্রধান রজভির]
তাছাড়া এই নয়া আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যাতে বাধা দিতে না পারে, সেটার সবরকম ব্যবস্থাও কেন্দ্র সরকার করে রেখেছে। নতুন আইন অনুযায়ী নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে সরাসরি সরকারি পোর্টালে, রাজ্য সরকারের কোনও দপ্তরে বা বিডিও অফিসে নয়। আবার আগে নাগরিকত্ব দেওয়া না দেওয়ার অধিকার ছিল জেলাশাসকদের হাতে। সেটাও এবার থাকছে না। নাগরিকত্বের আবেদন যাচাই করার জন্য এবার আলাদা একটি উচ্চস্তরীয় কমিটি গড়েছে কেন্দ্র। অর্থাৎ রাজ্য সরকার বা রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনও আধিকারিক গোটা প্রক্রিয়ার সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত থাকছেন না।