সুকুমার সরকার, ঢাকা: অসমে এনআরসি(NRC) চালু হওয়ার পরে বাংলাদেশে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। সক্রিয় হয়ে উঠেছিল ভারতবিরোধী শক্তিগুলি। হাসিনা প্রশাসন তৎপর থাকায় অবশ্য বড় কোনও গন্ডগোল হয়নি। তবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। ভারতে ভিসা নিয়ে আসা অনেক বাংলাদেশির মতো সাধারণ নাগরিকও এর সমালোচনা করতে থাকে। সম্প্রতি উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হওয়া সাম্প্রদায়িক অশান্তির ঘটনা সমালোচনার সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের বেশ কিছু মানুষের মনে। আর সেই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদির নিমন্ত্রণ বাতিলের দাবি তুলেছেন ধর্মীয় নেতারা। মূলত এই দাবির পক্ষে জোরালো সওয়াল করছেন চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মহম্মদ রেজাউল করিম ও হেফাজতে ইসলামির নেতা আল্লামা শফি।
এপ্রসঙ্গে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশকে উগ্র সাম্প্রদায়িক তৈরি করা হয়েছে। আর এটা হয়েছে ওই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাজকর্মের জন্যই। তাই এই ধরনের মানুষকে অতিথি হিসেবে বাংলাদেশে নিয়ে আসা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এই পরিকল্পনা রুখে দেবে বাংলাদেশের মানুষ ও পড়ুয়ারা।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের হতে মায়ানমারের সিম কার্ড, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ঢাকা ]
গত বৃহস্পতিবার হেফাজতে ইসলামির প্রধান আল্লামা শফি একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানান, অবিলম্বে নরেন্দ্র মোদির নিমন্ত্রণ বাতিল করতে হবে। যার হাতে গণহত্যার দাগ লেগে আছে। সেই ধরনের মানুষের উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দেশ কোনওদিন মেনে নেবে না।
বিভিন্ন কট্টর ইসলামিক সংগঠনের তরফে নরেন্দ্র মোদির নিমন্ত্রণ বাতিলের দাবি করা হলেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না শাসকদল আওয়ামি লিগ। এপ্রসঙ্গে তাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা কোনওদিন অস্বীকার করা যাবে না। তাহলে অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দেওয়া হবে। বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিনে উপস্থিত থাকার জন্য তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কোনও অবস্থাতে তা প্রত্যাহার করা হবে না।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার বার্তা দিল ‘বন্ধু’ ভারত]
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। সেই উপলক্ষে বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হবে ওইদিন। তাই নরেন্দ্র মোদির পাশাপাশি ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক বিশিষ্ট মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
The post মোদিকে ডাকলে বঙ্গবন্ধুর অপমান হবে, নিমন্ত্রণ বাতিলের দাবি হেফাজতে ইসলামির appeared first on Sangbad Pratidin.