নব্যেন্দু হাজরা: সরকারের আবেদনে সাড়া নেই৷ অথচ সরকারি নির্দেশিকাকে হাতিয়ার করেই অভিভাবকদের পকেটে কোপ বসাচ্ছেন পুলকার মালিকরা৷ সরকারের তরফে বলা হয়েছে, বেআইনি পুলকারকে রেগুলারাইজড করতে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আবেদন করতে হবে স্থানীয় আরটিও অফিসে৷ কিন্তু সরকারের সেই নির্দেশিকার পর দু’মাস কাটলেও আবেদনে সাড়া নেই অধিকাংশের৷ আবেদনও জমা পড়েছে নামমাত্র৷ অথচ সরকারের সেই নির্দেশিকাকে সামনে রেখেই ভাড়া বাড়ানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন অনেক মালিক৷ ঘটা করে ভাড়া বাড়ানোর নোটিস পৌঁছে দিয়েছেন অভিভাবকদের হাতে৷ যার ফলে সমস্যায় পড়েছেন ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা৷
ছোট ছোট বাচ্চাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বে-আইনি পুলকার বন্ধে উদ্যোগী হয়েছে সরকার৷ বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলে দেওয়া হয়েছে, ২০০৯ সালের পরবর্তীকালে যে প্রাইভেট গাড়িগুলো ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আনা-নেওয়া করছিল, সেই গাড়িগুলোকে এবার কমার্শিয়াল নাম্বার দেওয়া হবে৷ গাড়ির মালিকরা আরটিও অফিসে আবেদন করলেই সেই গাড়ি রেগুলারাইজড করার প্রক্রিয়া শুরু করবেন দফতরের কর্তারা৷ ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সেই আবেদন করতে হবে৷ ২ জুলাই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে একটি বৈঠক করে প্রতিটি পুলকার সংগঠনকে সে কথা জানিয়ে দেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী৷ কিন্তু মন্ত্রীর সেই ঘোষণার পর কেটে গিয়েছে দু’মাস৷ অথচ বেলতলায় আবেদন জমা পড়েছে ২০টিরও কম৷ যা দেখে কিছুটা চিন্তায় পরিবহণ দফতরের কর্তারাও৷ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এখনও তো সময় আছে৷ দেখা যাক না কতগুলো আবেদন জমা পড়ে৷ আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব৷”
তবে রাজ্যের আবেদনে সাড়া নেই তো কী আছে! রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিকে হাতিয়ার করে ভাড়া বাড়ানোর নোটিস অভিভাবকদের হাতে দিয়ে এসেছেন বেশ কয়েকজন পুলকার মালিক৷ সিঁথি থেকে সল্টলেকের কেন্দ্রীয় বিদ্যাভবনের ভাড়া ছিল এতদিন মাসে আড়াই হাজার টাকা৷ চলতি মাস থেকে সেই ভাড়া তিন হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে৷ তবে মুখে বলে তা বাড়ানো হয়নি৷ ঘটা করে নোটিস করা হয়েছে৷ তাতে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিকালে পুলকার সংক্রান্ত যে সমস্যা চলছে, নতুন করে পারমিট নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত যে খরচ বাড়ছে, সে কারণে পড়ুয়াপিছু ৫০০ টাকা করে ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে৷’
বিষয়টি যে মোটর ভেহিক্যালস দফতরের কর্তাদের কানে আসেনি তেমনটা নয়৷ কিন্তু পুলকার যেহেতু কন্ট্র্যাক্ট ক্যারেজ, সেহেতু এর ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করা রাজ্য সরকারের তরফে সম্ভব নয়৷ জানান দফতরেরই এক কর্তা৷ তবে তিনি বলেন, “আচমকা এভাবে ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়াটা একেবারেই উচিত নয়৷ বিষয়টি আমরা দেখব৷ প্রয়োজনে সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করব৷” ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বিষয়টি এখনও জানি না৷ কোনও অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে৷”
The post সরকারি বিজ্ঞপ্তিকে হাতিয়ার করে ভাড়া বাড়াচ্ছে পুলকার মালিকরা appeared first on Sangbad Pratidin.