সুব্রত বিশ্বাস: কয়লা কাণ্ডে তদন্তের ভার সিবিআই (CBI) নেওয়ার পর রাজ্যের ত্রিশটি জায়গায় শনিবার তল্লাশি শুরু করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কয়লা পাচারে যুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালার পুরুলিয়া নিতুরিয়ার বাড়িতে তল্লাশির সঙ্গে আসানসোল, পুরুলিয়া, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর, বর্ধমানে বিভিন্ন যায়গায় ব্যবসায়ীদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালাচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা বলে সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ইস্তফার পরই খেজুরিতে দুষ্কৃতী দাপট, রাতের আঁধারে একাধিক তৃণমূল কার্যালয়ে ভাঙচুর]
কয়লা কাণ্ডে আয়কর দপ্তরের তদন্তের পর তা হাতে নিতে চেয়েছিল সিবিআই। সারদা কাণ্ডে তদন্তে যুক্ত সিবিআই আধিকারিকদের এজন্য দিল্লিতে তলব করা হয় বলেও সূত্রের খবর। এদিকে তদন্তে প্রাপ্ত নথির ভিত্তিতে গঠিত ফাইলও আয়কর দপ্তর থেকে চেয়ে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। কিছুদিন আগে আয়কর দপ্তর কয়লাকাণ্ডে যুক্ত লালা ও বেশ কিছু ব্যবসায়ীর কলকাতা, আসানসোলের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি পেয়েছিল। নথির ভিত্তিতে তারা জেনেছে রাজ্যের ভিতর গরুপাচারে যুক্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কয়লা ব্যবসায়ীদের যোগ রয়েছে। উভয় পক্ষই রাজ্যের বেশ কিছু প্রভাবশালীদের সঙ্গে সখ্য রেখে নানা বেআইনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বেশ কিছু ব্যাবসায়িক সম্প্রতি নোটিশ পাঠিয়েছে সিবিআই। সামনের বছর রাজ্যে ভোট তার আগে এই পরিস্থিতিতে আগেই ক্ষোভ জানিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ফের কয়লাকাণ্ড হাতে নিয়ে তদন্ত শুরু করল সিবিআই।
উল্লেখ্য, রুপাচার কাণ্ডে উত্তাল বাংলার রাজনীতি। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীদের কাছে প্রচারের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এনামুলের দলবলের কীর্তি ও ‘কয়লা মাফিয়া’ লালার তাণ্ডব। এহেন পরিস্থিতিতে আয়কর দপ্তর ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) পর আসরে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। এদিকে, বিরোধী রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি অতি মাত্রায় সক্রিয়, এমন অভিযোগে বারবার সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এসবের মধ্যেই কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর দু’দিনের রাজ্য সফর চলাকালীন আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বেশ কয়েকজন কয়লা ব্যবসায়ীর বাড়ি এবং কার্যালয় অভিযান চালায় আয়কর দপ্তর। কলকাতায় চলে সিবিআই তল্লাশি। এসব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিঞ্চিৎ ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন। ওইদিন নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাজ্য পুলিশকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা, এটা কেন? এরপর অমিত শাহও সাংবাদিক সম্মেলনে পালটা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, ”ওনার সঙ্গে লালার কী সম্পর্ক? কেন উনি বাঁচাতে চাইছেন, তা স্পষ্ট করে বলুন।” তারপরই এই ‘লালা’ ওরফে অনুপ মাজিকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে।