শেখর চন্দ্র, আসানসোল: কয়লা পাচার কাণ্ডে (Coal Scam) প্রথম চার্জশিট জমা দিল সিবিআই (CBI)। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি দল আসানসোলের সিবিআই (CBI) আদালতে চার্জশিট জমা করে। সেই চার্জশিটে মোট ৪১ জনের নাম রয়েছে বলে সূত্রের খবর। রয়েছে একাধিক বেসরকারি সংস্থা, তাদের ডিরেক্টর এবং কয়লা খাদানের নামও।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, চার্জশিটে কয়লা মাফিয়া অনুপ মাজি ওরফে লালা-সহ তার সহযোগীদের নাম রয়েছে। রয়েছে বিনয় মিশ্র, বিকাশ মিশ্র, জয়দেব মণ্ডল, গুরুপদ মাজি, নিরোদ মণ্ডল, নারায়ণ নন্দা-সহ ধৃত ৮ ইসিএল আধিকারিকের নাম। এছাড়াও রয়েছে, আসানসোল-দুর্গাপুরের ১০ বেসরকারি কারখানার ডিরেক্টরদের নাম, যারা বেআইনি কয়লা কেনাবেচা করত। এছাড়াও রয়েছে অবৈধভাবে কয়লা খনন করত এমন ১৫ জন মাফিয়ার নাম।
সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম রয়েছে অনুুপ মাজির এজেন্ট রতনেশ্বর ভার্মার নাম। অভিযোগ, তিনি ইসিএলের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। কয়লা পাচারের পথ মসৃণ করতে তাদের সঙ্গে টাকা লেনদেনের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। নাম রয়েছে বিনয় মিশ্রর দুই এজেন্ট অমিত সিং এবং নীরজ সিংয়ের। হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা। বড়বাজারে শাড়ির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত তারা। অভিযোগ, পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে শাড়ির মাঝে কাঁচা টাকা পাচার করত এই দুই অভিযুক্ত।
[আরও পড়ুন: ‘১৯৯০-এ সিপিএমের আপত্তি সত্ত্বেও মমতাজিকে দেখতে আসি’, TMC নেতাদের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা ধনকড়ের]
ইতিমধ্যেই অনুপ মাজি ওরফে লালার সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ রক্ষাকবচ রয়েছে। বিনয় মিশ্র পলাতক। বিকাশ মিশ্র রয়েছে জেলে। এছাড়াও জয়দেব, গুরুপদ, নিরোদ ও নারায়ণ সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্ত হয়েছে। ধৃত ৮ ইসিএল আধিকারিকও জেল হেফাজতে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, কয়লা উত্তোলক সংস্থা কোলফিল্ডস লিমিটেডের (ECL) প্রাক্তন ও বর্তমান জিএম-সহ নিরাপত্তারক্ষীরা ১ আগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকতে হবে। তাদের জেরা করে একাধিক নতুন তথ্য পেয়েছে সিবিআই। সোমবার বিশেষ আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবীরা দাবি করেন, বেশ কিছু হাতে লেখা ভাউচার পাওয়া গিয়েছে। সেই ভাউচারে রয়েছে অনুপ মাজি (Anup Maji) ওরফে লালা কোথায়, কখন, কাকে, কত টাকা দিয়েছিল। ভাউচারে রয়েছে ইসিএল কর্তাদের নামে কোডিং ডিকোডিং তথ্য। রয়েছে সাংকেতিক চিহ্নও। মনে করা হচ্ছে, সেই সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমেই টাকা লেনদেন হত। তাই বিচারকের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে যাতে জেল হেফাজত থাকাকালীন জিজ্ঞাসাবাদ করা যায় অভিযুক্তদের। বিচারক সিবিআই আইনজীবীর আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর মঙ্গলবার চার্জশিট জমা করল সিবিআই।