অর্ণব আইচ: আর জি কর হাসপাতালে হাউজ স্টাফ নিয়োগে পর পর তিন বছরের দুর্নীতি ধরা পড়ল সিবিআইয়ের হাতে! কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের অভিযোগ, ৮৪ জন চিকিৎসক তথা হাউস স্টাফ নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির সন্ধান মিলেছে। চলতি বছর আর জি করে হাউস স্টাফ নিয়োগের জন্য ১৩ জনের কমিটি তৈরি হয়। ইন্টারভিউয়ের পরে কমিটির প্রত্যেককে সই করতে হয়। যদিও চূড়ান্ত সই করতেন আর জি করে দুর্নীতির মূল অভিযুক্ত তথা প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আদালতের কাছে সিবিআইয়ের দাবি, এভাবে ২০২২ ও ২০২৩ সালে হাউস স্টাফ ইন্টারভিউয়ের পর কমিটির অন্যান্যদের সই বাতিল করে দেওয়া হয়। সন্দীপ ঘোষ নিজের মতো হাউস স্টাফ নিয়োগ করে তালিকা তৈরি করেন। এর পেছনে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে ধারণা সিবিআইয়ের।
সিবিআই সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বিপ্লব সিংহের সংস্থা মা তারা ট্রেডার্স ছাড়া আরও দুটি সংস্থার হদিশ পেয়েছে। বাবা লোকনাথ ও তিয়াসা এন্টারপ্রাইজ নামে দুটি সংস্থা টেন্ডারে জড়িত বলে প্রাথমিক খবর। এই তিন সংস্থার নামে টেন্ডার চাওয়া হত। সন্দীপ ঘোষ ইচ্ছামত দর তৈরি করে বিপ্লবেরই একটি সংস্থাকে টেন্ডার দিতেন। আর জি করে কয়েকজন অফিসার দরপত্রের বিষয়টি জানলেও কাউকে কোনও নথি দেওয়া হত না। শুধু বিপ্লবের টাকা তোলার সময় সন্দীপ ঘোষ ওই আধিকারিকদের নথি দিতেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
[আরও পড়ুন: রবিতে ফের ‘রাত দখল’, শিলিগুড়িতে ‘ভোর দখলে’র ডাক টেবিল টেনিস তারকা মান্তুর]
একইভাবে সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ আরেক ভেন্ডার সুমন হাজরার সংস্থার মাধ্যমে শুধু মেডিক্যাল সরঞ্জাম নয়, সোফা সেট বা রেফ্রিজারেটরও কেনা হত। নিরাপত্তারক্ষী আফসার আলির স্ত্রীর নামে একটি কাফে খোলা হয় হাসপাতালে। সেটি আফসারই চালাতেন। তাঁর টাকার লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ ছিল সন্দীপ ঘোষের হাতে। যদিও অনেক সময় নিজের পিঠ বাঁচাতে সন্দীপ ঘোষ দশ হাজার টাকা থেকে এক লক্ষ টাকার মধ্যে যাবতীয় বরাত এই তিনজন ভেন্ডারকেই দিতেন বলে জানিয়েছে সিবিআই। ইতিমধ্যে সন্দীপের সঙ্গে বিপ্লব, সুমন ও আফসারকেও সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে।