নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বগটুই (Bogtui) কাণ্ডে অভিযুক্ত লালন শেখের বাড়ি থেকে একটি কুকুরকে বৃহস্পতিবার উদ্ধার করল সিবিআই (CBI)। গত ৯ দিন গৃহবন্দি ছিল সারমেয়টি। অভুক্ত কুকুরটি এদিন দরজা খোলা পেতেই দৌড়ে বাইরে আসে। এবং খাবারের জন্য একরকম হাতে পায়ে ধরতে শুরু করে তদন্তকারী দলটির। সংকর প্রজাতির জার্মান শেপার্ড (German Shepherd) কুকুরটিকে আপাতত পাশের বাড়ির জিম্মায় দিয়েছে তদন্তকারী দল। যদিও জেলা পশু চিকিৎসালয়ের পশু চিকিৎসক সৌরভ কুমার জানান, কুকুরটির চিকিৎসা প্রয়োজন। নচেত তার আচরণে পরিবর্তন ঘটতে পারে।
বগটুই গ্রামের পূর্ব পাড়ায় ভাদু শেখের গ্রামের বাড়ি। পাশেই তার সঙ্গী লালন শেখের বাড়ি। সেই বাড়ি লাগোয়া ফটিক শেখের ঘরে আগুন লাগে গত সোমবার। ফটিক শেখের বাড়ি লক্ষ্য করে পড়তে থাকে মুহুর্মুহু বোমা। অভিযোগ, কুপিয়ে খুন করা হয় ফটিকের স্ত্রী মীনা বিবিকে। পাশের বাড়ির এই কাণ্ডে স্বভাবতই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে গৃহপালিত জন্তুটি। কুকুরপ্রেমী সংগঠন হ্যান্ডস অফ লাভের সরমিন রেজা বলেন, “এমনিতেই কুকুররা অতিরিক্ত শব্দ যেমন বোমার শব্দ, মাইকের আওয়াজ, বাজনার শব্দে আতঙ্কে থাকে। সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে বাড়ির বাইরে বোমা-আগুনের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পরে সে।”
[আরও পড়ুন: কোটি টাকার লটারি পেয়েই বাড়ি থেকে উধাও, রাতভর কলাবাগানে লুকিয়ে দিনমজুর!]
বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল লালন শেখের বাড়িতে তল্লাশিতে যায়। বাড়িতে তালা মেরে ঘটনার পর থেকে গ্রাম ছাড়া লালন ও তাঁর পরিবার। ফলে গত ৯ দিন ধরে জার্মান শেপার্ডটি না খেতে পেয়ে, এমনকী পানীয় জলও না পেয়ে এই গরমে একেবারে অসুস্থ অবস্থায় পড়েছিল। যদিও প্রতিবেশিরা জানায় মাঝে মাঝে কুকুরটি দোতলার উঠে মালিকদের খোঁজে চিৎকার করেছে। কিন্তু গত সোমবারের পর থেকে গ্রামের চিত্র বদলে গিয়েছে। এত পুলিশ, এত লোক যে লালনের ঘরে একটা গৃহপালিত কুকুর যে আটকে আছে তা কেউ খেয়াল করেনি।
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা, ব্যাপক উত্তেজনা গোবরডাঙায়]
পশু চিকিৎসক সৌরভ কুমার বলেন, কুকুরটি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত থাকবে। তার আচরণের কিছু পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। তার মালিককে বা প্রিয়জনকে সে খুঁজবে। খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। আপাতত তাকে একা একটি ছায়াযুক্ত ঘরে অল্প অল্প খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু কুকুরের মালিক লালন এখন নিখোঁজ। তার খোঁজেই তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। ততদিন জার্মান শেপার্ডটিকে প্রতিবেশীদের জিম্মায় থাকবে। তাদেরকেই কুকুরটিকে সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল।