shono
Advertisement

ঘুষ না দিলে চাকরি কেড়ে নেব! SSC পাস করা শিক্ষকদেরও হুমকি জীবনকৃষ্ণর, রিপোর্ট সিবিআইয়ের

একাধিক চাকরিপ্রার্থী অভিযোগ জানিয়ে সিবিআইয়ের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
Posted: 09:22 PM Aug 09, 2023Updated: 09:24 PM Aug 09, 2023

অর্ণব আইচ: পরীক্ষায় পাস করেও রেহাই মেলেনি চাকরিপ্রার্থীদের। নিয়ম মেনে পাস করে শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও জীবনকৃষ্ণ সাহাকে টাকা দিতে হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের। কিছু টাকা আগাম দেওয়ার পর দাবি করেছেন বিপুল টাকা দেওয়ার। আগাম দেওয়া টাকা ফেরত চাইতে গেলেই চাকরি কেড়ে নেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়েছেন জীবনকৃষ্ণ। এই চাঞ্চল‌্যকর তথ‌্য উঠে এসেছে সিবিআইয়ের তদন্তে। এই ব‌্যাপারে সিবিআই মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে রিপোর্টও পেশ করেছে। একাধিক চাকরিপ্রার্থী এই ধরনের অভিযোগ জানিয়ে সিবিআইয়ের কাছে সাক্ষ‌্য দিয়েছেন।

Advertisement

সিবিআইয়ের সূত্র জানিয়েছে, নবম-দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অভিযুক্ত জীবনকৃষ্ণ সাহার সঙ্গে চাকরির জন‌্য যোগাযোগ করেছিলেন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা অনেক চাকরিপ্রার্থীই। এক চাকরিপ্রার্থী জানান, লোক মারফৎ তাঁকে ডেকে পাঠান জীবনকৃষ্ণ। ২০১৬ সালে ওই চাকরিপ্রার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন। এসএসসির তালিকায় তাঁর নাম ওঠে। এর পরও জীবনকৃষ্ণ জোর করে তাঁর কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নেন। এরপর তিনি ১২ লক্ষ টাকা ওই প্রার্থীর কাছ থেকে চান। তিনি জীবনকৃষ্ণকে জানান, তিনি নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিয়েই পাস করেছেন। তাই তিনি কোনও টাকাই দেবেন না। ওই বিপুল টাকা তাঁর পক্ষে দেওয় সম্ভব নয়। উলটে তিনি ওই এক লক্ষ টাকা ফেরত পাওয়ার জন‌্য বারবার অনুরোধ জানান। তদন্ত করে সিবিআই জেনেছে, ওই প্রার্থী ওএমআর শিটে কোনওরকম কারচুপি করেননি। অভিযোগ, এরপরই স্বমূর্তি ধরেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। রীতিমতো হুমকি দিয়ে বিধায়ক জানান, যদি ওই ১২ লক্ষ টাকা না দেওয়া হয় এবং টাকা যদি ফেরত চাওয়া হয়, তবে তাঁর শিক্ষকের চাকরি কেড়ে নেওয়া হবে।

[আরও পড়ুন: সেমিস্টার পদ্ধতিতে উচ্চমাধ্যমিক! পরীক্ষা হতে পারে OMR শিটে, নয়া ভাবনা সংসদের]

একইভাবে আরও এক প্রার্থী এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে চাকরি পান। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, আট লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হবে। ওই টাকা যদি না দেওয়া হয়, তবে তাঁর চাকরি কেড়ে নেওয়া হবে। ওই প্রার্থী রীতিমতো ভয় পেয়েই আট লক্ষ টাকা জীবনকৃষ্ণকে দিয়ে দেন। এই টাকা আদায়ের ঘটনার সঙ্গে মামলায় ধৃত বিধায়কের অন‌্য তিন সঙ্গী শেখ আলি ইমাম, কৌশিক ঘোষ, প্রসন্নকুমার রায় ওরফে রাকেশ যুক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরও একজন চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, বিধায়ক চাকরি দিচ্ছেন, তা জেনেই তিনি ২০১৮ সালে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিধায়ক তাঁর কাছ থেকে দু’দফায় ৭৫ হাজার ও ২৫ হাজার টাকা নেন। কিন্তু তার পর এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে তিনি কোনও সাহায‌্য ছাড়াই পাস করেন। কিন্তু ওই এক লক্ষ টাকা ফেরত পাননি। উপরন্তু তাঁর কাছ থেকে বিধায়ক আরও পাঁচ লক্ষ টাকা চান।

অন‌্য এক প্রার্থীর কাছ থেকেও চাকরির টোপ দিয়ে জীবনকৃষ্ণ ১২ লক্ষ টাকা চান। এর মধ্যে আগাম ৯৫ হাজার টাকা আদায় করেন। এর পর ওই প্রার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করার কারণে বাকি টাকা দেবেন না বলে জানান। তাতে তাঁকে হুমকি শুনতে হয়। ৯৫ হাজার টাকাও ফেরত পাননি। আরও এক প্রার্থীর কাছ থেকে আগাম তিন লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। মোট সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা তাঁকে দিতে বলেছিলেন বিধায়ক। বাকি টাকা তিনি দেবেন না বলায় হুমকির মুখে পড়তে হয়। জীবনকৃষ্ণর এই ‘কুকীর্তি’তে তাঁর সঙ্গীদেরও হাত ছিল বলে জানিয়েছে সিবিআই।

[আরও পড়ুন: ‘শরীরের কথা ভেবে পাকাপাকিভাবে ধূমপান ছাড়ুন’, বুদ্ধবাবুকে অনুরোধ কুণালের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement