সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মণিপুরের (Manipur) চূড়াচাঁদপুরে কুকি ও জোমি সম্প্রদায়ের দুই মহিলাকে নগ্ন করে ঘোরানোর মামলায় চার্জশিট পেশ করা করল সিবিআই। যেখানে বিস্ফোরক অভিযোগ করা হয়েছে স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে। সিবিআইয়ের (CBI) দাবি, সেদিন নির্যাতিত হওয়ার আগে পুলিশের কাছে সাহায্যের আর্তি জানিয়েছিলেন দুই মহিলা। তবে পুলিশ (Police) কোনও সাহায্য করেনি বরং উন্মত্ত জনতার সামনে তাঁদের ফেলে এলাকা ছেড়ে চলে যায় পুলিশ।
আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, 'ওই ঘটনা ঘটার আগে কোনওমতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি পুলিশ জিপের সামনে পৌঁছন দুই মহিলা। পুলিশের কাছে আবেদন জানান, ওই এলাকা থেকে তাঁদের কোনও নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। হামলা থেকে বাঁচতে পুলিশ গাড়িতে তখন আরও দুই ব্যক্তি বসে ছিলেন। কিন্তু জিপের চালক তাঁদের জানায় তাঁর কাছে গাড়ির চাবি নেই। এবং ওই এলাকায় কোনও বিপদ নেই বলেও জানানো হয় পুলিশের তরফে।' চার্জশিটে সিবিআইয়ের দাবি, 'এর কিছু সময় পর বিপুল সংখ্যায় উন্মত্ত জনতা সেখানে পৌঁছয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় পুলিশ। এর পর ওই পুলিশ গাড়িতে লুকিয়ে থাকা দুই মহিলাকে বের করে নগ্ন করে ঘোরানো হয় রাস্তায়। একইসঙ্গে যৌন নির্যাতন করা হয় ওই মহিলাদের।' সিবিআইয়ের দাবি অনুযায়ী, এই ঘটনা ঘটেছিল গত বছরের ৩ মে। নির্যাতিতা ওই দুই মহিলার একজনের বয়স ২০ বছর ও অন্যজনের বয়স ৪০-এর কাছাকাছি।
[আরও পড়ুন: ‘অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন’, পান্নুন খুনের ষড়যন্ত্রে মার্কিন দৈনিকের দাবি ওড়াল ভারত]
সেদিনের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের গাফিলতি প্রকাশ্যে আসায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন মণিপুরের ডিজিপি রাজীব সিং। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, 'অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে গাফিলতি প্রকাশ্যে আসার পর ইতিমধ্যেই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।' তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করা হলে আধিকারিক জানান, 'এই মামলার তদন্ত সিবিআই করছে ফলে কোনও রকম আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হলে সেটা সিবিআই নেবে।'
[আরও পড়ুন: মিজোরামে প্রায় ১০ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার, আটক ২]
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে মণিপুরে দুই নির্যাতিতাকে নগ্ন করে প্যারেড করানোর ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়। এরপরই ঘটনার নিন্দায় সরব হয় গোটা দেশ। ঘটনার নিন্দা করে মুখ খোলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মামলাও দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। এর পর এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইকে। সেই ভিডিও সূত্র ধরে মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। যার মধ্যে ছিলেন এক নাবালকও। দীর্ঘ তদন্তের পর অবশেষে সেই মামলায় চার্জশিট পেশ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।