সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংগীত জগতে ফের নক্ষত্রপতন। চলে গেলেন ডিস্কো কিং বাপি লাহিড়ী (Bappi Lahiri)। তাঁর সুরেই ডিস্কো গানের সঙ্গে পরিচয় ঘটে দেশবাসীর। বলিউড ছবির গানকে অন্যরূপ দিয়েছিলেন তিনি। তৈরি করেছিলেন নিজস্ব স্টাইল। বাপি লাহিড়ীর প্রয়াণে শোকাহত বিনোদন জগৎ। শিল্পীদের স্মৃতিচারণে উঠে এল সুরকারের নানা কথা।
ঊষা উত্থুপ- আমি মানতেই পারছি না। এভাবে চলে গেল বাপিদা। বাপিদার থেকে অনেক কিছু পেয়েছি, অনেক কিছু শিখেছি। এই শূন্যতা পূরণ করা যাবে না। এদিনটা মন খারাপের। আমার সব গান তো বাপিদার জন্যই। এই শোক মেনে নেওয়া খুব কঠিন।
কুমার শানু- একদিন বাপিদা খুব তাড়ায় ছিলেন। একটা গানের রেকর্ডিং ছিল সেদিন। আমি স্টুডিওতে ঠিক সময় মতো পৌঁছে গিয়েছিলাম। বাপিদা সোজা এসে সরাসরি প্রশ্ন করলেন, ”গানটা কম্পোজ করেছো তোমরা?” উত্তরে সবাই বললো ,”শুধু মুখরা হয়েছে অন্তরা বাকি”। বাপিদা তখন ভাবলেন কেন গানটা পুরোপুরি তৈরি হয়নি। আমি বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ”বাপিদা, আমি কি পরে আসবো? কারণ গানটা তো তৈরিই হয়নি।” বাপিদা বললেন, ”দশ মিনিট সময় দে।” ওখানে দাঁড়িয়েই বাপিদা অন্তরাটা কম্পোজ করলেন, গানটা গাইলেন, রেকর্ড করলেন। তারপর পুরো গানটা আমাকে শেখালেন। এটাই বাপি লাহিড়ী। ভারতীয় সংগীতের অমর সঙ্গী।
শান্তনু মৈত্র- আর পারছি না। পর পর দুঃসংবাদ। প্রথমে লতাজি, সন্ধ্যাদি, আর এখন বাপিদা! ধীরে ধীরে সংগীত জগত তো ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। এই শূন্যতা পূরণ করার কেউ নেই। যাঁদের থেকে সব কিছু শিখেছি। তাঁরাই চলে গেলেন। অভিভাবকহীন মনে হচ্ছে।
অনুরাধা পড়োয়াল-
কী খারাপ সময়! একে একে সব গুণীজন চলে যাচ্ছেন। খুব বড়মাপের সংগীত পরিচালক ছিলেন তিনি। বড়মাপের মানুষও ছিলেন। এই শূন্যতা আর কখনওই পূরণ হবে না।
[আরও পড়ুন: কিশোর কুমারের প্রয়াণের পর গান ছাড়তে চেয়েছিলেন, ফিরে দেখা বাপিদার জীবনের অজানা গল্প ]
রাঘব চট্টোপাধ্যায়- কলকাতায় এলে দেখা হত বাপিদার সঙ্গে। গান নিয়ে আড্ডাও হত। আমি তো ছোটবেলা থেকেই বাপিদার গানের ফ্যান। সুরকার, গায়ক হিসেবে তিনি তো অসাধারণই, বাপিদার মতো মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। অমায়িক ব্যবহার তাঁর। সারাক্ষণ সেজে গুজে থাকতেন। আমার ভীষণ প্রিয় মানুষ।
জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়- মুম্বইয়ে থেকেও বাপিদা ছিলেন মনে প্রাণে বাঙালি। এটা বাপিদার থেকে শেখার মতো একটি বিষয়। আমার সুর করা কোনও নতুন গান শুনলেই বাপিদা আমাকে ফোন করে বলতেন, দারুণ সুরটা করেছিস। রেকর্ডিং স্টুডিওতেও কত আড্ডা দিতাম, মজা করতাম, সব মনে পড়ছে। বাপিদার সুর দেওয়া গানের মতোই বলতে চাই, ‘কভি অলবিদা না কহেনা।’ বাপিদা তোমাকে অলবিদা জানাতে পারলাম না! তুমি সারাজীবন থেকে যাবে।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়- আমার বহু সিনেমার গান তো বাপিদার সুরেই। শুধু বাংলা নয়, আমি যে ক’টা হিন্দি ছবি করেছি, তার সবক’টাতেই সংগীত দিয়েছিলেন বাপিদা। শুধু কাজের দিক থেকে নয়, বাপিদা আমার আত্মীয় ছিলেন। চিরদিনই তুমি যে আমার… বাপিদা আমার কাছে ঠিক এই গানের মতোই।
বাপিদার প্রয়াণে রেডিও সঞ্চালক ও অভিনেতা মীর ফেসবুক পোস্টে লিখলেন, ”সব চকচকে জিনিস সোনা হয় না, বাপি লাহিড়ী হয়!”