নব্যেন্দু হাজরা: মান্ধাতা আমলের চুরি, বালা, আংটি বা হার বানানো আর নয়। জেলা বা গ্রামের প্রত্যন্ত এলাকার সোনার দোকানের কারিগরদেরও এবার আধুনিক ডিজাইনে গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে আধুনিক গয়না কিনতে জেলার মানুষদের কলকাতায় ছুটে আসতে না হয়। বৈচিত্র্য আনা হবে তাঁদের কাজে। পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্পে রাজ্যের প্রায় ৫০ হাজার সোনার দোকানের কারগিরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিভিন্ন জেলায় হবে শিবির। কেন্দ্রের ঠিক করা এক সংস্থা এই প্রশিক্ষণ দেবে। ওই সংস্থার তরফে বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতিকে এবিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জানানো হয়েছে, এ রাজ্যের স্বর্ণশিল্পীদেরও আধুনিক গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ এবং স্বাবলম্বী হয়ে ব্যবসা করার পথ দেখানো হবে এই স্কিমে। পাঁচদিন ধরে চলবে এই প্রশিক্ষণ শিবির। আট ঘণ্টা করে চলবে প্রশিক্ষণ। আগামী মাসের গোড়াতেই যা শুরু হওয়ার কথা। প্রশিক্ষণ চলাকালীন শিল্পীদের একেকজনকে দিনে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ পাঁচদিনে পাবেন আড়াই হাজার টাকা। প্রশিক্ষণ শেষে হবে পরীক্ষা। তারপর তাঁদের একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এমনকী, কারিগরদের যন্ত্রাংশ কিনতে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে। পরে তাঁরা নিজেরা যদি ব্যবসা করতে চান সেক্ষেত্রে ঋণও মিলবে এই স্কিমে। ব্যবসায়ীদের আশা, এর ফলে বাংলার স্বর্ণশিল্প উন্নত হবে।
[আরও পড়ুন: ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর ‘শাস্তি’, আয়ার নৃশংস অত্যাচারে মৃত্যু বৃদ্ধার]
তবে এই প্রকল্পে কেবলমাত্র সোনার দোকানের কারিরগরদেরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাদের গয়না তৈরিতে কোনও অভিজ্ঞতা নেই, তাঁরা আবেদন করতে পারবেন না। আগে দেখে নেওয়া হবে তাঁরা কিছু অন্তত কাজ জানেন কি না! নচেৎ প্রশিক্ষণে টাকা পাওয়া যাবে এটা ভেবে অনেকেই আবেদন করতে পারেন। পুরো বিষয়টা তত্ত্বাবধান করবে বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতি। তাঁরাই প্রত্যেক জেলায় এই কারিগরদের তালিকা প্রস্তুত করবে। প্রশিক্ষণে আগ্রহীদের উল্লেখ করতে হবে, তাঁরা কোন দোকানে কাজ করেন। তাছাড়া আধার কার্ডের প্রমাণপত্র এবং পঞ্চায়েত প্রধানের থেকে একটি শংসাপত্র জমা দিতে হবে।
মূলত প্রত্যন্ত এলাকার স্যাঁকরার দোকানের কারিগরদের আধুনিক গয়না তৈরিতে প্রশিক্ষিত করা এবং স্বাবলম্বী করার লক্ষে এই প্রকল্প বলে জানানো হয়েছে। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পীদের সমিতির সাধারণ সম্পাদক টগরচন্দ্র পোদ্দার বলেন, “এই প্রশিক্ষণের ফলে জেলা এবং গ্রামের প্রচুর সোনার কারিগররা উপকৃত হবেন। তাঁরা নিজেরা ব্যবসা করার জন্য ঋণও পেতে পারেন। আমরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করব। এর ফলে জেলার মানুষদের ভবিষ্যতে কলকাতায় গয়না কিনতে ছুটে আসতে হবে না।”