সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমলাদের জন্য বরাদ্দ পদে ল্যাটারাল এন্ট্রি বা সমান্তরাল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের। বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের জন্য ইউনিয়ান পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা ইউপিএসসিকে মঙ্গলবার চিঠি লিখল কেন্দ্রীয় সরকার। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে বাধ্য হয়েই কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের যুগ্মসচিব ও অধিকর্তা পদে ৪৫ জনকে নিয়োগের উদ্যোগ নেয় সরকার। এই মর্মে ইউপিএসির তরফে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়। যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। দেশের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর পাশাপাশি মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন মোদি সরকারের মন্ত্রী তথা এলজেপি নেতা চিরাগ পাসওয়ান। বিতর্ক চরম আকার নিতেই মঙ্গলবার ইউপিএসসির চেয়ারপার্সন প্রীতি সুদানকে চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। যেখানে স্পষ্টভাবে জানানো হয় ওই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করার জন্য। চিঠিতে তিনি লেখেন, '২০১৪-র আগে সরাসরি আমলা নিয়োগ অ্যাড-হক পদ্ধতি করা হত। যেখানে বার বার দেখা গিয়েছে পক্ষপাতের ঘটনা। কিন্তু আমরা নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চাইছি। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন ল্যাটারাল এন্ট্রি প্রক্রিয়া সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত সমতা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের নীতিগুলির সাথে সামঞ্জস্য রেখে হওয়া উচিত, বিশেষ করে সংরক্ষণের বিষয়টিকে মাথায় রেখে। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ আমাদের সাংবিধানিক কাঠামোর মূল ভিত্তি। যার উদ্দেশ্য সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সুযোগ দেওয়া। সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই ইউপিএসসির কাছে অনুরোধ সমান্তরাল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিল করা হোক।'
[আরও পড়ুন: 'কিশোরীদের যৌন সংযম’, হাই কোর্টের সেই বিতর্কিত পর্যবেক্ষণ খারিজ শীর্ষ আদালতে]
তবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ইউপিএসসিকে এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিলের পিছনে সরাসরি শরিক চাপ দেখছে রাজনৈতিক মহল। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ্যে আসাত পর এর বিরোধিতায় সরব হন মোদি সরকারের মন্ত্রী এলজেপি নেতা চিরাগ পাসওয়ান। তিনি বলেন, ''সরকারি আধিকারিক পদে কোনও রকম সমান্তরাল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আমরা বিরোধী।" একই সঙ্গে বলেন, "সরকারি চাকরিতে যেখানেই যা নিয়োগ হবে, সেখানে সংরক্ষণের বিধি মেনে চলতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় কোনও অন্যথা আমরা মানব না।" শরিকদল এলজেপির চাপের মুখে পড়েই অবশেষে ইউপিএসসিকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিল কেন্দ্র।
[আরও পড়ুন: ‘অনুমতি ছাড়া অরুণাচলে প্রবেশ নয়’, ‘বহিরাগত’ রুখতে বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
নিয়ম অনুযায়ী, দেশের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলির শীর্ষ পদে নিযুক্ত করা হয় আইএএস অফিসারদের। কিন্তু সেখানে আমলাদের পরিবর্তে বেসরকারি সংস্থার পদাধিকারীদের বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রথম সরব হন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ‘দেশদ্রোহী’ বলে কটাক্ষ করার পাশাপাশি রাহুল বলেন, ‘উচ্চ পদে ল্যাটারাল এন্ট্রি হলে দলিত ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিভুক্ত বা ওবিসিদের উপর আক্রমণ নেমে আসবে।’ তাঁর দাবি, 'দেশের প্রশাসনিক ক্ষেত্রকে এভাবে ধ্বংস করার যে ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে।'