সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বাবুল সুপ্রিয়কে হেনস্তার ঘটনায় পরোক্ষে ক্ষমাই চেয়ে নিল সংস্কৃত কলেজের ভাষা বিজ্ঞানের ছাত্র দেবাঞ্জন! সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অপরোধবোধে ভুগছি’ বলেই পোস্ট করে সে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ওই পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করেন তাঁর টুইটারে। যদিও পোস্টটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ছাত্র সংগঠনগুলি।
[আরও পড়ুন: ‘ছেলের কোনও ক্ষতি করব না’, যাদবপুর কাণ্ডে অভিযুক্ত দেবাঞ্জনের মাকে আশ্বাস বাবুলের]
গত বৃহস্পতিবার প্রায় টানা ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে হেনস্তা করা হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে। সেই ঘটনার একাধিক ছবি এবং ভিডিও বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তাতেই নাম জড়িয়েছে সংস্কৃত কলেজের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র দেবাঞ্জন বল্লভ চট্টোপাধ্যায়ের। অভিযোগ, বহিরাগত হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বাবুলের চুলের মুঠি ধরে বেধড়ক মারধর করে সে। ওই ছবি সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় ভরে গিয়েছে। তারপর থেকেই আশঙ্কায় ভুগছেন দেবাঞ্জনের ক্যানসার আক্রান্ত মা এবং স্কুলশিক্ষক বাবা। যদিও ওই ছাত্র এই ছবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। প্রযুক্তির মাধ্যমে ছবি বিকৃত করে তার বিরুদ্ধে কুৎসা করা হচ্ছে বলেও দাবি করে দেবাঞ্জন।
কিন্তু কয়েকঘণ্টার মধ্যেই নিজের অবস্থান বদল করল বাবুলের ‘হেনস্তাকারী’ দেবাঞ্জন বল্লভ চট্টোপাধ্যায়, অন্ততপক্ষে এমনই দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। শনিবার সন্ধেয় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন বাবুল। একটি স্ক্রিনশট দিয়ে তিনি লেখেন দে বাঞ্জন নামে একটি প্রোফাইল থেকে ইংরেজিতে বার্তা দেওয়া হয়েছে, “আমি এই মেসেজটি লিখছি কারণ আমি খুবই অপরাধবোধ করছি। আমি যে আচরণ করেছি তার জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিন।” নিচে লেখা দেবাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। সেই স্ক্রিনশট শেয়ার করে বাবুল লিখেছেন, “আমি জানি না এটা কতটা সত্য। কিন্তু আমি অন্তত ১০ থেকে ১২টি মেসেজ পেয়েছি।” একইসঙ্গে বাবুল লিখেছেন, এই নিয়ে বামপন্থী ও চরমপন্থী নেতাদের নিশ্চয়ই কোনও বক্তব্য থাকবে। তবে এই পোষ্টটি আদৌ দেবাঞ্জন করেছে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
[আরও পড়ুন: যাদবপুরে বাবুলকে নিগ্রহে নাম জড়িয়েছে ছেলের, আতঙ্কে দেবাঞ্জনের পরিবার]
এদিকে, শনিবার সকালে ছেলের হয়ে আগেই বাবুল সুপ্রিয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন দেবাঞ্জন বল্লভ চট্টোপাধ্যায়ের মা। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়ে যায়। ক্যানসার আক্রান্ত মায়ের কান্নাভেজা চোখের কাতর আর্জিতে সাড়াও দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। ফেসবুক এবং টুইটারে তিনি লেখেন, “চিন্তা করবেন না মাসিমা, আমি কোনও ক্ষতি করব না। আপনার ছেলের। ওর ভুল থেকে ও শিক্ষা নিক এটাই চাই। আমি নিজে কারও বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করিনি। কাউকে করতেই দিইনি, দেবও না। আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না। তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন। আমার প্রণাম নেবেন।”
তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে হেনস্তার ঘটনায় ছেলের নাম জড়ানোয় কার্যত গৃহবন্দি হয়ে গিয়েছেন দেবাঞ্জনের বাবা। আপাতত আতঙ্কেই রয়েছেন বাবা-মা দু’জনেই।
The post বাবুলের কাছে ক্ষমা চাইল হেনস্তাকারী দেবাঞ্জন! পড়ুয়ার ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জল্পনা appeared first on Sangbad Pratidin.