রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: করোনা আতঙ্ক (Coronavirus) কাটিয়ে প্রায় দেড় বছর পর রাজ্যে খুলছে স্কুল-কলেজ। ১৬ নভেম্বর থেকে ফের স্কুলমুখী হবে পড়ুয়ারা। সোমবার শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যসচিবকে এই নির্দেশ দিয়ে ঘোষণা করেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের শিক্ষামহল। কিন্তু এই সিদ্ধান্তকে পরিকল্পনাহীন বলে কটাক্ষ করলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ ডা. সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, ”পরিকল্পনা না করে এই রাজ্যে স্কুল, কলেজ খোলা ঠিক নয়।”
আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে স্কুল-কলেজ (Schools and Colleges) খুলে যাচ্ছে। তার আগে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে স্যানিটাইজেশনের কাজ চলছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে তা শেষ করার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চলবে ক্লাস। আগামী বছর মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে ক্লাসরুমে বসে, ঠিক দু বছর আগে যেভাবে হয়েছিল। এই ঘোষণা হয়েছে শিক্ষাদপ্তরের তরফে। ফলে এই মুহূর্তে স্কুল খোলা নিয়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে রাজ্য সরকারের অন্দরমহলে। প্রতিটি স্কুল, কলেজে নিয়মিত চলছে স্যানিটাইজেশনের কাজ, যাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বসতে পারে ছাত্রছাত্রীরা, সেই পরিকাঠামো গড়ে তোলার চেষ্টাও চলছে।
[আরও পড়ুন: উত্তরাখণ্ড থেকে কফিনবন্দি ৫ বাঙালির দেহ ফিরল শহরে, চোখের জলে শেষ বিদায়]
তারই মধ্যে করোনা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলেন সুভাষ সরকার (Subhas Sarkar)। বৃহস্পতিবার বিজেপি পার্টি অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে তাঁর বক্তব্য, ”এই সিদ্ধান্ত আরও পরিকল্পনা করে নিলে ভাল হতো। স্কুল-কলেজ খোলা হচ্ছে, অথচ কীভাবে পডুয়ারা স্কুলে যাবে, তা ঠিক হয়নি। লোকাল ট্রেন এখনও চালু হয়নি। এই অবস্থায় আমার মনে হয়, পরিকল্পনাহীন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: স্রেফ একটি দাঁত তুলতে বেসরকারি হাসপাতাল চাইল ৭ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ রোগী]
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আরও বক্তব্য, ”কেন্দ্রীয় সরকার স্কুল-কলেজ নিয়ে মোট ১৪টি অ্যাডভাইজারি পাঠিয়েছে। রাজ্য সরকার তার কোনওটারই উত্তর দেয়নি। যেভাবে পুজোর সময় লোক বের হয়েছে এবং করোনা বাড়ছে, রাজ্য সরকারের উচিত, কিছু গোপন না করে নতুন করে ভাবা উচিত।” তাঁর পরামর্শ, ”শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীদের দু’ডোজের ভ্যাকসিন নেওয়া হতে হবে। দুই, অভিভাবকদের মতামত নিতে হবে। তিন, ১৫ দিন অন্তর সব পড়ুয়ার Rapid Test করানো দরকার। চার, একদিন অন্তর পড়ুয়াদের আসতে বলতে হবে।” যদিও এ নিয়ে শাসকদলের নেতাদের বক্তব্য, পরিকল্পনাহীনতার অভিযোগ মোটেই ঠিক নয়। যথেষ্ট ভাবনাচিন্তা করে, প্রস্তুতি নিয়ে তবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে রাজ্যে।