সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর কয়েক বছরের মধ্যেই যে দেশে জলসংকট চরম আকার ধারণ করতে চলেছে সেই আশঙ্কা বহুদিন ধরেই প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যসভায় (Rajya Sabha) কেন্দ্রের তরফে যে তথ্য় দেওয়া হল তা কেমন আশঙ্কাজনকই নয়, রীতিমতো ভয় ধরানোও। সেই তথ্য অনুযায়ী, দেশের অধিকাংশ মানুষ জলের নামে যা পান করছেন, তা রীতিমতো ‘বিষ’। দেশের প্রায় সব রাজ্যের সব জেলাতেই ভূগর্ভস্থ (Groundwater) জলে বিষাক্ত উপাদান মিলেছে।
জেনে নেওয়া যাক কী কী তথ্য দিয়েছে সরকার:
- দেশের ২৫টি রাজ্যের ২০৯টি জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে আর্সেনিকের পরিমাণ প্রতি লিটারে ০.০১ মিলিগ্রামের চেয়েও বেশি।
- ২৯টি রাজ্যের ৪৯১টি জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে লোহার পরিমাণ প্রতি লিটারে ১ মিলিগ্রামের চেয়েও বেশি।
- একই ভাবে ভূগর্ভস্থ জলে ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ প্রতি লিটারে ০.০৫ মিলিগ্রামের চেয়েও বেশি ১৬টি রাজ্যের ৬২টি জেলায়।
- প্রতি লিটারে ০.০৩ মিলিগ্রামের চেয়েও বেশি ইউরেনিয়াম রয়েছে ১৮টি রাজ্যের ১৫২টি জেলার ভূগর্ভস্থ জলে।
[আরও পড়ুন: ‘রাগ ছিল, জুতো মেরে শান্তি পেয়েছি’, ESI হাসপাতালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর হামলা মহিলার]
জলশক্তি মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য থেকে আরও জানা যাচ্ছে, দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ পানীয় জলের জন্য ভূগর্ভস্থ জলের উপরই নির্ভর করেন। ফলে যদি নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি বিষাক্ত উপাদান ওই জলে থাকে, তার অর্থ দেশের অধিকাংশ মানুষই জলের সঙ্গে বিষপান করছেন।
রাজ্যসভায় সরকারি তথ্য থেকে আরও জানা গিয়েছে, জনবসতিতে পানীয় জলের উৎসগুলি দূষিত হয়ে পড়েছে। শহরের চেয়ে গ্রামে এই সমস্যা আরও গভীর আকার ধারণ করেছে। সেখানে পানীয় জলের জন্য লোকে হ্যান্ড পাম্প, কুয়ো, নদী ও পুকুরের জলের উপরই নির্ভর করে। অর্থাৎ সরাসরি মাটির তলা থেকে আসা জল পান করেন তাঁরা। ফলে বিপদ সেখানে আরও বেশি। জল শোধন করে নেওয়ার উপায় নেই বলে তাঁরা কার্যত বাধ্যতই বিষপান করছেন।
এই পরিস্থিতিতে জলসংকটের বিষয়টিকে রাজ্যের ঘাড়েই চাপিয়েছে কেন্দ্র। তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যের দায়িত্ব পানীয় জল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। তবে কেন্দ্রও যে দূষণমুক্ত জল সরবরাহ করতে নানা প্রকল্প চালাচ্ছে সেকথাও জানানো হয়েছে।