ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: খরিফ মরশুমে শস্যের ফলন ভাল। জোগান পর্যাপ্ত। তার পরও চাল-সহ নানা ফসলের দাম (Price) কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। সে কথা মেনে নিয়েই খোলা বাজার ও রেশন দোকান মারফত ভরতুকিতে চাল ও বাকি ফসল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠকে এ নিয়ে পরিস্থিতির বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে চাল-সহ মরশুমি ফসলের দাম কমিয়ে তা জনতার নাগালে আনতে দেশজুড়ে চালকল মালিক ও সরবরাহকারীদের সংগঠনের কাছেও আবেদন করেছে কেন্দ্র।
চাল-সহ ঊর্ধ্বমুখী সমস্ত ফসলের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে একইসঙ্গে কেন্দ্র সরকার আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থাকবে। তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, গত দেড় বছরে ১২ শতাংশ বেড়েছে চালের দাম। যা নিয়ন্ত্রণে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না বলে চিন্তা বাড়িয়েছে কেন্দ্রের সরকারেরও। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি জনতার কাছে কম দামে চাল-আটা (Rice-Wheat) বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ফুড কর্পোরেশন বা এফসিআইয়ের (FCI) মতো সরকারি একাধিক সংস্থার কাছে তাদের আবেদন, রাস্তায় নেমে সরাসরি জনতার হাতে কম দামে খাদ্যপণ্য পৌঁছে দিক তারা। খোলা বাজারে সরাসরি তাদের মাধ্যমে চাল বিক্রির কাজ শুরু করতে তার ব্র্যান্ডিংও (Branding) করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: আদালত চত্বরেই সিবিআই আইনজীবীর হেলমেট চুরি! বিচারক বললেন, ‘সবাই মিলে খুঁজুন’]
এই ভরতুকিযুক্ত চালের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভারত চাল’। একইসঙ্গে ‘ভারত আটা’, ‘ভারত ডাল’ – এমন নাম দিয়ে পরপর বাকি ফসল বা শস্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা চাল খোলা বাজারে বিক্রি করলে তা প্রতি কেজি ২৫ টাকায় বিক্রি করবে এফসিআইয়ের মতো সংস্থা। রেশন ডিলাররা তা বিক্রি করবেন কেজি প্রতি আরও ৪ টাকা বেশি মূল্যে। তবে এই চাল বা অন্য ফসল ৩১ মার্চের মধ্যে এফসিআইকে বিক্রি করে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এই প্রশ্নও উঠেছে যে, চাল বা অন্য যে ফসলই বিক্রি করুক এই সংস্থাগুলি, তা কতটা মজুত করা যাবে।
[আরও পড়ুন: প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা: অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ সিবিআইয়ের, নাম OMR সংস্থার দুই প্রধানের]
কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, তাতে কোনও নির্দিষ্ট বাধা নেই। যে কোনওরকম পরিমাণে শস্য মজুত করে তা বিক্রি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারের মূল উদ্দেশ্য, পর্যাপ্ত শস্যভাণ্ডার থেকে বের করে তার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ। রেশন ডিলারদের কাছেও সেই বিজ্ঞপ্তি গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু।
অন্যদিকে, ডিলারদের কমিশন বাড়ানো নিয়ে যে আন্দোলন ১৬ জানুয়ারি হওয়ার কথা ছিল, তা নিয়েও সংশয় দেখা গিয়েছে। আগেই রামলীলা ময়দানে তাদের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এবার যন্তরমন্তরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাধারণতন্ত্র দিবসের কর্মসূচির প্রস্তুতির কথা জানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তর, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রীর দপ্তরে প্রতিনিধি পাঠিয়ে ডেপুটেশন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ডিলাররা।