ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ৬ দিন ধরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে (Visva Bharati University) জারি পড়ুয়াদের আন্দোলন। তার ফলে ‘গৃহবন্দি’ উপাচার্য। বন্ধ কেন্দ্রীয় কার্যালয়। স্থগিত ভরতি প্রক্রিয়া এবং ফলপ্রকাশও। তবে কি বন্ধের পথে বিশ্বভারতী, এমনই প্রশ্ন উঠছে। তবে এই পরিস্থিতিতে আরও কড়া অবস্থান কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের।ঘণ্টায় ঘণ্টায় ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ রাখা যাবে না বলেও জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের এই অবস্থানের পরই বুধবার রাতে বেতন ও পেনশনও দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্বভারতী স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, সরাসরি রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাও করে যে আন্দোলন চলছে তা ‘রাজনৈতিক’ মদতপুষ্ট। সারাদিনের পাশাপাশি রাতেও বিক্ষোভ চলছে। বাড়িতে খাবার এবং জল পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি জেনেও নির্বিকার স্থানীয় প্রশাসন। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) রিট পিটিশন দাখিল করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সব কিছু ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবার এই পিটিশনের শুনানি হতে পারে।
[আরও পড়ুন: সংসার ভাঙার অভিযোগ, ‘দ্বিতীয় বিয়ে’ কাণ্ডে আদালতে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত BJP বিধায়কের]
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতীর প্রায় ১২ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও অর্থনীতি এবং সংগীত বিভাগের মোট ৩ জন পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সাসপেনশন বর্ধিত করা হয়। তারা সাসপেন্ড থাকাকালীন তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakrabarty) বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘যথেচ্ছাচার’ করছেন। তার প্রতিবাদে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সরকারি বাসভবন ঘেরাও করে ছাত্র আন্দোলন চলছে। রাজনৈতিক ব্যানারে এই আন্দোলনে কেউ যুক্ত না হলেও “পৌষ মেলা মাঠ বাঁচাও কমিটি” আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। ছাত্র আন্দোলনকে সর্মথন জানিয়েছে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেসের মতো রাজনৈতিক দল।
এই আন্দোলন শুরু হতেই বিশ্বভারতীতে ছাত্র ভরতি, পরীক্ষার ফল প্রকাশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় অফিসের কাজ বন্ধ। কর্মীদের বেতনও পেনশন বন্ধ করা হয়েছিল। যদিও বুধবার রাতে বেতন, পেনশন দিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে বিশ্বভারতী বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছিল তা ভালভাবে নেয়নি কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। সেখান থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতী দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। কোনওভাবেই বন্ধ করা যাবে না কেন্দ্রীয় অফিস।