বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়দিল্লি: দেশের নিরপত্তা জড়িত। সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প (Agnipath Project) সংক্রান্ত কোনও নথি প্রকাশ করা যাবে না বলে জানিয়ে দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সম্প্রতি বিহারের এক সমাজকর্মী তথ্য জানার অধিকার আইনে অগ্নিপথ সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য জানতে চেয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে (Defence Ministry) চিঠি দেন। উত্তরে, বিষয়টি ‘সিক্রেট ফাইল’। তাই এই সম্পর্কিত তথ্যপ্রকাশ সম্ভব নয় বলে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। সমালোচনায় সরব তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামেরা। প্রকল্পটি বাতিল করা উচিত। এটি একটি গ্যাস বেলুন। তাই এখন কেন্দ্র তথ্য গোপনের পথে হাঁটছে বলে তোপ দাগেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। কেন্দ্র তথ্য গোপন করতে চাইছে মানেই ‘ডালমে কুছ কালা হ্যায়’। কটাক্ষ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যর।
[আরও পড়ুন: এলাহি খাওয়াদাওয়া, মিছিলে আসতে নগদ! বিজেপির নবান্ন অভিযানে খরচ ১১ কোটি, দাবি তৃণমূলের]
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ঘোষিত অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। এই প্রকল্প ঘোষিত হতেই তা বাতিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায় বেকার যুবকরা। বিশেষ করে উত্তর ভারতে। একের পর ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। চাপের মুখে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে আলোচনা জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে আহ্বান জানালে তৃণমূলের তরফে তীব্র বিরোধিতা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) নির্দেশে প্রকল্পটি বাতিলের দাবিতে বৈঠকে সরব হন লোকসভায় তৃণমূল সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ সৌগত রায়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কাছে প্রকল্প বাতিলের দাবিও জানান। অন্য বিরোধীরাও তৃণমূলের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে।
প্রকল্প ঘোষণার সময় মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানান হয়েছিল, নির্বাচিত অগ্নিবীরদের (Agniveer) এক-চতুর্থাংশকে সেনাবাহিনীতে (Indian Army) নিয়োগ করা হবে। প্রথম তিন বছর ৩০ হাজার ও শেষ বছরে ৪০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। চার বছর পূর্ণ হওয়ার পরে বাতিলদের দেওয়া ১১ লক্ষ দেওয়া হবে। যাতে তাঁরা অন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নিতে পারে। বা পড়াশোনায় ব্যবহার করতে পারে। সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তের চরম বিরোধিতা করে বিরোধীরা। কিন্তু বিরোধীদের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে অগ্নিপথ প্রকল্প বাস্তবায়নে মরিয়া কেন্দ্র। তাই বিতর্ক এড়াতে চূড়ান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখার পক্ষে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তথ্য জানার অধিকার আইনে সমাজকর্মী জানতে চান, অগ্নিবীরদের আর্থিক সুযোগ সুবিধা ও ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে মন্ত্রকে কী আলোচনা হয়েছে তা প্রকাশ করা হোক। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানান হয়, অগ্নিপথ প্রকল্প গোপনীয় বিষয়। তাই অগ্নিবীরদের আর্থিক সুযোগ সুবিধা ও ভাতা সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
[আরও পড়ুন: বাইকে লাগানো ডিনামাইট! স্টার্ট দিতেই জোরালো বিস্ফোরণ বীরভূমে]
এমনিতেই সেনাবাহিনীতে নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এবার নথি গোপনের সিদ্ধান্তে বিতর্ক চরম আকার নেবে বলেই মনে করছে মন্ত্রকের একাংশ।