সুলয়া সিংহ: ময়দানি ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নাম তিনি। কোস্টারিকার বিশ্বকাপার জনি অ্যাকোস্টার শহরে আসা নিয়ে যেমন পাহাড় প্রমাণ প্রত্যাশার পারদ চড়ছিল তেমনি প্রত্যাশা বাড়ছিল তাঁর মাঠে নামার অপেক্ষাতেও। প্রায় দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ইস্টবেঙ্গল দলের সঙ্গে অনুশীলন করলেও লিগের কোনও ছোটো ম্যাচে তাঁকে নামানো যায়নি সই-সমস্যার জন্য। রাশিয়া বিশ্বকাপ শেষে ভারতে এসেই ভারতীয় ফুটবলের মক্কায় অ্যাকোস্টা প্রথম মাঠে নামলেন বড় ম্যাচে। প্রথম ম্যাচে আহামরি কিছু না করলেও, এটুকু বলাই যায় যে ম্যাচে নিজের ছাপটা রেখে গেলেন কোস্টারিকার বিশ্বকাপার।
[বড় ম্যাচ অমীমাংসিত, আরও জমে উঠল লিগের লড়াই]
প্রথমার্ধে মোহনবাগান যখন একের পর এক তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছিল, তখন অনেকে মনে করছিলেন হঠাৎ করে অ্যাকোস্টাকে বড় ম্যাচে নামিয়ে দেওয়াটা বোধ হয় ভুল হয়েছে সুভাষ ভৌমিকের। রক্ষণের নতুন সঙ্গীর সঙ্গে প্রথমবার খেলায় হোক, কিংবা প্রথম ম্যাচের মানসিক চাপের জন্যেই হোক, ম্যাচের শুরুর দিকে অ্যাকোস্টার উপস্থিতি সত্ত্বেও লাল-হলুদ রক্ষণকে এক্কেবারে ছন্নছাড়া মনে হল। এর দায় কিছুটা হলেও কোস্টারিকার বিশ্বকাপারকে নিতে হবেই। কিন্তু তাতে দমে না গিয়ে ইস্টবেঙ্গলের মতো তিনিও ঘুরে দাঁড়ালেন। প্রথমার্ধের এক্কেবারে শেষ মুহুর্ত। ডানদিক থেকে আসা ক্রস থেকে ফাঁকা গোলে দুরন্ত গতিতে হেডার অ্যাকোস্টার। কোনওরকমে বাঁচিয়ে দিলেও বলটা গ্রিপ করতে পারেননি মোহনবাগান অধিনায়ক শিল্টন পাল। রিবাউন্ডে ফের অ্যাকোস্টার গায়ে লেগে বল ঢুকে গেল গোলে। প্রথমার্ধের ঠিক আগের মুহূর্তে অ্যাকোস্টার গোল মোমেন্টাম দিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গলকে। আর দ্বিতীয়ার্ধে সেই মোমেন্টামকেই কাজে লাগালেন অ্যাকোস্টা এবং লাল-হলুদ ফুটবলাররা।
[মহামেডান স্পোটিংয়ের ফুটবলারের বাড়িতে বোমাবাজি, ছড়াল চাঞ্চল্য]
ম্যাচ শেষে তাই দু’দলের কোচেরাও স্বীকার করে নিলেন, পার্থক্য গড়ে দিয়েছে অ্যাকোস্টার গোলই। ইস্টবেঙ্গল কোচ বাস্তব রায় বললেন, “ প্রথম ম্যাচে যেমন প্রত্যাশা করেছিলাম তেমনি খেলেছে অ্যাকোস্টা। প্রথমার্ধের শেষে ওঁর গোলটাই আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিল।” অন্যদিকে মোহনবাগান কোচের স্বীকারোক্তি, “আগেই বলেছিলাম অ্যাকোস্টা থাকলে ওঁরা বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলবে, হলও তাই। অ্যাকোস্টার গোলই ওদের মানসিকভাবে তৈরি করে দিল দ্বিতীয়ার্ধের আগে।” ম্যাচের আরও একটি টার্নিং পয়েন্ট মেহতাব হোসেনের চোট। নামার সঙ্গে সঙ্গে চোট পেয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যান মেহেতাব। মোহনবাগান কোচের আফশোস বাণী, “মেহতাবকে যেভাবে ব্যবহার করব ভেবেছিলাম তা হল না।তাঁর আগেই ও চোট পেয়ে গেল।” আর ম্যাচের ফল নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে শংকরলাল কার্যত স্বীকার করে নিলেন, দু’দলই হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। তিনি বলেন, “ম্যাচ শেষে আমি আর সুভাষদা দু’জনেই দু’জনকে বললাম, বেঁচে গেলাম।“
The post অ্যাকোস্টার গোলই ডার্বির টার্নিং পয়েন্ট, একমত বাস্তব-শংকরলাল appeared first on Sangbad Pratidin.