সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ধুন্ধুমার। ওয়াকফ বিল নিয়ে আলোচনা চলাকালীন বিজেপি ও তৃণমূল সাংসদদের মধ্যে তীব্র বচসার ঘটনায় এবার মুখ খুললেন যৌথ সংসদীয় কমিটির সভাপতি জগদম্বিকা পাল। জানালেন, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বোতল ছুড়েছিলেন, তাতে তাঁর চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত।
এদিন এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ''উনি যেভাবে বোতল ছুড়েছেন, ঈশ্বরের কৃপা যে আমার সামনে এসে বোতল পড়ে গেছে। আমার দিকে যেভাবে বোতল ছোড়া হয়েছে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হতেই পারত। কারও মধ্যে যদি এত রাগ থাকে তিনি একজন সাংসদ হতে পারেন না। যা করেছেন, তা অপরাধ।''
এদিন তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় কল্যাণের। অভিযোগ, এর পরই কাচের বোতল ছোড়েন তিনি। তাতেই হাতে চোট পান শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ।
নিশিকান্ত দুবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কমিটি থেকে পাকাপাকিভাবে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু জেপিসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁকে একটি বৈঠকের জন্য সাসপেন্ড করার। আর সেই প্রসঙ্গেই জগদম্বিকার বক্তব্য, ''যা ঘটেছে তা অত্যন্ত অনভিপ্রেত, নজিরবিহীন এবং অসংসদীয়। আমার চার বারের সাংসদ জীবনে এই ঘটনা কখনও দেখিনি। আশা করব উনি এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবেন। বিরোধিতার একটি প্রক্রিয়া থাকে। মতভেদ হতেই পারে। কিন্তু আজ যে ঘটনা ঘটেছে তা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। শুধু বোতল ছুড়ে মারা নয়, প্রথমে বোতল ভেঙে তার পর ছুড়ে মারা হয়েছে। কাল কেউ রিভলভার নিয়েও চলে আসতে পারে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আজ এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে আমাকে।''
সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, ''উনি সংসদের অভ্যন্তরে অধিবেশন চলাকালীন ও এই ধরনের আচরণ করেন। সেখানে হয়তো প্রচার পাবার জন্য এধরনের কাজ করেন। কিন্তু এটা জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটির বৈঠক ছিল। উনি আর যেভাবে গালিগালাজ করছিলেন তা কখনওই গ্রহণযোগ্য নয়। উনি নিজে যখন ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন তখনও চেয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছিলেন। স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। সাংসদদের প্রতিনিধিদল স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেছেন।''
এদিকে এদিন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও কল্যাণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ''ওঁকে আগে ভদ্রতা শিখতে বলুন। ওঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলুন।'' অতীতেও কল্যাণকে নিয়ে এই ধরনের প্রতিক্রিয়াই জানাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেই পুরনো তিক্ততার রেশই কি এবার সংসদে পড়ল? উঠছে প্রশ্ন।