মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: কথাগুলো শুনতে হয়তো খারাপ লাগবে। কিংবা বলা হবে আমি হয়তো পাগলের প্রলাপ বকছি। হতে পারে। কিন্তু ব্যক্তিগত মতামত না তুলে ধরে পারছি না। হ্যাঁ, আমার মতে, সামান্য হলেও এগিয়ে আছে প্যারিস সা জাঁ বা পিএসজি (PSG)। কেন? সেই ব্যাখ্যাই এবার যাই। তবে শুরুতেই বলে রাখছি, সম্পূর্ণ আমার ধারণা।
ডিফেন্ডার ছিলাম বলে বলছি তা কিন্তু নয়, অভিজ্ঞতা বলছে যে দলের ডিফেন্স ভাল সেই দলকে হারানো মুশকিল। বরং সেই দল এগিয়ে থাকে। বিশেষ করে যখন ফিফটি-ফিফটি ম্যাচ হয়। দেখুন, তুল্যমূল্য লড়াই হবে রবিবার। বায়ার্ন মিউনিখ (Bayern Munich) ভাল খেলছে। প্রচুর গোল করছে। বার্সেলোনার মতো দলকে তারা ৮-২ গোলে হারিয়েছে। তার আগে চেলসিকে দুই পর্ব মিলিয়ে গোলের মালা পরিয়েছে। সুতরাং মনোবলের দিক দিয়ে অবশ্যই এগিয়ে থাকবে বায়ার্ন। কিন্তু বায়ার্নের সেমিফাইনাল ম্যাচকে একবার স্মরণ করুন। প্রথম ১৬ মিনিট তো ঝড় তুলে দিয়েছিল লিঁয়। কী সব গোলের সুযোগ নষ্ট করল। একের পর এক গোলের কাছে এসেও গোল করতে পারল না। কখনও আবার পোস্টে গিয়ে বল লাগল। মন্দভাগ্য ছাড়া একে কী বলবেন বলুন।
[আরও পড়ুন: একই দলে খেলতে দেখা যাবে রোনাল্ডো-নেইমার-মেসিকে? ফুটবলবিশ্বে তুঙ্গে জল্পনা]
সেই সময় যদি দু’-তিন গোলে এগিয়ে যেত ফরাসি বাহিনি তাহলে চাপে পড়তে বাধ্য হত বায়ার্ন। তখন খেলা অন্যরকম হত না কে বলতে পারে? সেদিন কাগজে দেখছিলাম, বায়ার্নের কোচ নিজে স্বীকার করেছেন তাঁর রক্ষণভাগ দুর্বল। গোল করার লোক রয়েছে বলে প্রচণ্ড আক্রমণে ঝড় তুলে দিয়ে প্রতিপক্ষদের বারবার চাপে ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছে। তার মানে এই নয় যে, ফাইনালে তারই প্রতিফলন ঘটবে। নেইমার (Neymar Jr.) আছে। যে এবার দুরন্ত ফর্মে। কোভিড-১৯ (Corona) সারা বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়ে গেল। আশঙ্কা-আতঙ্কের দোলাচলে বিশ্ববাসী এখন ঠক ঠক করে কাঁপছে। ঠিক একই রকমভাবে যেন পরিবর্তনের ধারা ফুটে উঠছে নেইমারের খেলায়। সারা বিশ্বের ফুটবল প্রেমীরা চমকে যাচ্ছেন। সঙ্গে দলে রয়েছেন এমবাপে-ডি মারিয়া, মাসকারেনহাসের মতো গোল গেটাররা।
আবার অন্যদিকে রয়েছে লেওনডস্কি। বিশ্ব ফুটবলে এই মুহূর্তে ত্রাস। কী সব গোল করছে। ইতিমধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে (Champions League) করে ফেলেছে ১৫ গোল। আর দু’টো গোল করলে রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) এক মরশুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৭ গোলের রেকর্ড স্পর্শ করবে। খুব একটা অবাক হব না যদি রোনাল্ডোর রেকর্ড ভেঙে দেয়। তাছাড়া সঙ্গী পেয়ে গিয়েছে নাব্রি-পেরিসিচ, মুলারের মতো ফুটবলারদের। তার মানে বুঝতেই পারছেন, আজকের লড়াইয়ের মাত্রাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। তবু বায়ার্নকে এগিয়ে রাখতে পারলাম না, স্রেফ ডিফেন্সের জন্য। গোলকিপার নুয়্যারকে নিয়ে প্রশ্নই উঠতে পারে না। প্রতিপক্ষের তুলনায় অনেক এগিয়ে। কিন্তু রক্ষণের দিকে তাকান। বোয়েতাং, মার্টিনেজ, আলফান্সো, কিমিচ মোটেই ভাল খেলছেন না। দেখছি ডিফেন্সে বেশ কিছু ফাঁক-ফোকর তৈরি হচ্ছে। এটাই বিপদ ডেকে আনতে পারে বায়ার্নকে। অন্যদিকে পিএসজির ডিফেন্স অনেক বেশি শক্তপোক্ত। দিয়াগো সিলভা, কিমেম্বে, তেহেরের-দের খেলায় ফুটে উঠছে একটা পরিকল্পনার ছাপ। ফলে গোল খেয়েছে কম। তাই বায়ার্ন হয়তো মনের দিক দিয়ে এগিয়ে। অঙ্ক বলছে পিএসজি যাবতীয় হিসেব উলটে দিতে পারে।
[আরও পড়ুন: লুকাকুর আত্মঘাতী গোলে স্বপ্নভঙ্গ ইন্টারের, ষষ্ঠবার ইউরোপা লিগ জিতল সেভিয়া]
The post বায়ার্ন নয়, এই কারণেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের লড়াইয়ে এগিয়ে নেইমারের পিএসজি appeared first on Sangbad Pratidin.