সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাস কয়েক আগেও ছবিটা এরকম ছিল না। অস্ট্রেলিয়া থেকে টেস্ট সিরিজ হারার পর সমালোচনায় ছিন্নভিন্ন হয়েছিলেন রোহিত-বিরাটরা। আঙুল উঠেছিল কোচ গৌতম গম্ভীরের দিকে। আর এদিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে যেন সমস্ত নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন তিনজনেই।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর কোচের পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন রোহিত ও বিরাটও। কোচের পদে গৌতম গম্ভীর আসার পর থেকেই প্রত্যাশা তুঙ্গে ছিল। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে পর্যন্ত সেই প্রত্যাশার ধারেকাছেও ছিলেন না গম্ভীর। শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজে হার, ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে টেস্ট সিরিজে চুনকাম। তারপর বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতে গিয়ে হতাশাজনক পারফরম্যান্স। এমনকী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল বাছা নিয়েও কম প্রশ্ন ওঠেনি। কেন সিরাজের বদলে হর্ষিত রানা? কেন শেষ মুহূর্তে দলে ঢুকলেন বরুণ চক্রবর্তী? কেন ব্যাটিং অর্ডারে পিছনে পাঠানো হচ্ছে কেএল রাহুলকে?
সবকটার উত্তর পাওয়া গেল দুবাইয়ে। স্পিন সহায়ক পিচে ভেলকি দেখালেন বরুণ চক্রবর্তী। মাত্র ৩ ম্যাচ খেলেই তাঁর উইকেট সংখ্যা ১০। ফাইনালেও কিউয়ি ব্যাটাররা বুঝে উঠতে পারলেন না কীভাবে বরুণকে সামলাবেন। আর প্রায় প্রতি ম্যাচেই শেষের দিকে ভরসা দিলেন কেএল রাহুল। একটা টুর্নামেন্টেই সমালোচনার পাশা বদলে দিলেন গম্ভীর।
আর শুধু ভারতের কোচ তো নয়, প্রশ্ন উঠেছিল দুই সিনিয়র ক্রিকেটারকে নিয়েও। এমনকী রোহিত-বিরাটদের অবসর নেওয়া উচিত বলে কত আলোচনা। কিন্তু দুজনেই দেখিয়ে দিলেন, কেন তাঁরা বড়মাপের প্লেয়ার এবং তাঁরা কত বড়মাপের প্লেয়ার। বিরাট কোহলি শুরু করলেন পাকিস্তানকে শাসন করার মধ্যে দিয়ে। সেখানে হাঁকালেন সেঞ্চুরি। তারপর সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮৪ রান। তাঁর কাঁধে ভর দিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠেছিল ভারত। ফাইনালে অবশ্য রান পেলেন না। কিন্তু সেখানে নিজের জাত চেনালেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। দেখিয়ে দিলেন অধিনায়কের কাজ কী? একেবারে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন হিটম্যান। ফাইনালে করলেন ৭৬ রান। বিশেষ করে পিচ যেখানে স্লো হচ্ছে, সেখানে আসলে এটাও সেঞ্চুরির থেকে কম কিছু নয়।
এভাবেই জবাব দিতে হয়। এভাবেই মাঠে আগুন ঝরাতে হয়। আর নতুন প্রজন্মকে পথ দেখাতে হয়। শুধু জাতীয় দলে ফের নিজেদের কর্তৃত্ব প্রমাণ করা হয়। দেখিয়ে দিলেন এভাবেই ফিরে আসতে হয়।
