নব্যেন্দু হাজরা: পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে অনেকদিন আগেই। জায়গায় জায়গায় খুঁটিপুজো থেকে মণ্ডপ তৈরির প্রস্তুতি সবই চলছে জোরকদমে। আর তিলোত্তমাকে আলোর সাজে সাজাতে এখন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই চন্দননগরের আলোকশিল্পীদেরও। প্রতি পুজোতেই চন্দননগরের আলোর জাদু চমকিত করে গোটা দেশকে। সেখানে নানা সাম্প্রতিক ইস্যুকে তুলে ধরা হয় আলোর থিমে। এবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতীয় মহাকাশযানের সফল অবতরণকে ফুটিয়ে তুলবেন এখানকার আলোকশিল্পীরা।
একাধিক শিল্পীই এবার চন্দ্রাভিযানকে থিম বানাচ্ছেন। হাতে সময় খুবই কম। কতগুলো বোর্ডে কীভাবে চাঁদে ভারতীয় মহাকাশযানের সফল অবতরণকে তুলে ধরা হবে, তা নিয়ে শিল্পীরা এখন মাথা ঘামাচ্ছেন। চন্দ্রযান বিক্রম-৩ এখান থেকে ছাড়ার সময় থেকে ওখানে সফল অবতরণ, কীভাবে এটি কক্ষপথে ঘুরেছে, সবই থাকবে এবার এখানকার আলোর খেলায়। তবে শুধু চন্দ্রাভিযান নয়, এছাড়াও একাধিক থিম ফুটিয়ে তোলা হবে পুজোয়। থাকছে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য থেকে আসন্ন বিশ্বকাপ ক্রিকেট সবকিছুই।
[আরও পড়ুন: রেলের কাজ করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, টাওয়ার থেকে পড়ে মৃত্যু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের]
শ্রীধর দাসের হাত ধরেই কয়েক দশক আগে চন্দননগর হয়ে উঠেছিল আলোর শহর। বছরের পর বছর এখানকার আলোর থিমেই পুজোর সময় ঝলমলে হয়ে ওঠে তিলোত্তমা। শ্রীধরের লাইটিং দেশের গণ্ডি পার করে বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে বহুদিন আগেই। তারপর বাবু পালের আলোর থিম মানুষের নজর কেড়েছে। তাঁদের পাশাপাশি চন্দননগরে উঠে এসেছেন আরও অনেক নতুন আলোকশিল্পী। পালপাড়া, বিদ্যালঙ্কার ধার ঘেঁষে রয়েছে ছোট, বড়, মাঝারি আলোর কারখানা। সেখানকার শিল্পীরা এখন চরম ব্যস্ত। শিল্পী ভাস্কর দে সরকার যেমন এবার তাঁর থিমে চন্দ্রাভিযানকে ফুটিয়ে তুলছেন। বলেন, ‘‘গোটা দেশের কাছে এটা বিরাট সাফল্য। তার মধ্যে এতজন বাঙালি রয়েছেন ইসরোতে। দেশের গৌরব, বাংলার গৌরব সবকিছুই। আট ফুট বাই আট ফুট বোর্ডে এই চন্দ্রাভিযানের প্রতিটি বিষয় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। অনেকেই কথা বলেছেন। তবে হাতে সময় তো খুব কম। চন্দ্রযান ছাড়া থেকে ল্যান্ডিং, তারপর চাঁদে দেশের পতাকা ওড়ার দৃশ্য। চাঁদ থেকে পৃথিবীকে কেমন লাগে, সবই থাকছে আলোর থিমে। সবই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পাওয়া ছবি দেখেই কাজ হচ্ছে।’’ এবার আসন্ন ক্রিকেট বিশ্বকাপকেও আলোর মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলবেন তিনি।
আরেক শিল্পী জয়ন্ত দাসের কথায়, ‘‘এটা তো অনস্বীকার্য চন্দ্রাভিযান গোটা দেশের কাছে একটা বিরাট সাফল্য। চন্দননগরের শিল্পীরা প্রতিবছরই সাম্প্রতিক বিষয়বস্তুকে আলোর থিমে ফুটিয়ে তোলেন। এবারও তোলা হচ্ছে। অর্ডার পেলেই আমিও চন্দ্রযান ছাড়া থেকে চাঁদে পৌঁছনো সবকিছুই আলোয় ফুটিয়ে তুলব।’’ এছাড়াও অন্যান্য শিল্পীরা জানাচ্ছেন, “পুজোর অর্ডার তো বহুদিন আগে থেকেই দিয়ে রেখেছেন পুজো উদ্যোক্তারা। সেগুলোর কাজ চলছে। চন্দ্রাভিযান কেউ চাইলে তাও করে দিতে পারি।”