অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: ঘড়ির কাঁটায় ঠিক দুপুর একটা। রেলনগরী খড়গপুর শহরের গোলবাজারে রবীন্দ্র ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামের মঞ্চে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। সম্মেলন সবেমাত্র শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই নজিরবিহীন ঘটনা। দেখা গেল, একদল মহিলা প্রতিনিধি আসন থেকে এক মহিলাকে টেনে হিঁচড়ে বের করছে। ঘটনা ঘিরে শোরগোল তৈরি হয়।
নিগৃহীতা ওই মহিলার নাম শেফালি রায়। এদিন প্রথমে তাঁকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে কোমরে দড়ি বাঁধা হয়। দুটো হাত বেঁধে দেওয়া হয়। তারপরই চাকরি দেওয়ার নামে নেওয়া টাকা ফেরতের দাবি জানান বিক্ষুব্ধরা। চলতে থাকে চিৎকার চেঁচামেচি। এদিকে তখন সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা বেগতিক বুঝে তড়িঘড়ি করে সম্মেলনের কাজ শেষ করে কেটে পড়েন। ফিরে যান দিলীপ ঘোষও। তবে যাওয়ার আগে বলেন, “আমি জানি না বিষয়টি। ইউনিয়নের নেতারা বলতে পারবেন।” এদিকে মহিলাদের মারমুখী আচরণে রীতিমতো রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে রেলনগরী খড়গপুর শহরের গোলবাজার এলাকায় রবীন্দ্র ইনস্টিটিউট চত্বর। পরে ওই মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি হোটেলে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: গ্রামের রাস্তায় শুধু জল আর কাদা, ঢোকে না অ্যাম্বুল্যান্সও, ভেঙে যাচ্ছে বিয়ে!]
বিক্ষুব্ধ মহিলাদের দাবি, শেফালিদেবী তাঁদের কাছ থেকে রেলের গুডস শেডে কাজের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত একজনকেও কাজ করিয়ে দিতে পারেননি। এমনকি গত ছয় মাস ধরে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। যদিও শেফালি রায়ের দাবি, তিনিও চাকরি প্রার্থী। তাঁর কথায়, “আমাকেও তিন লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে। আমার ভাইকেও দিতে হয়েছে। আমি কোনও টাকা নিইনি।”
এই ঘটনায় পাঁচ মহিলা-সহ দু’জন পুরুষ ও হোটেল মালিকের ছেলেকে আটক করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, ওই মহিলাকে মারধর করা ও দড়ি বেঁধে ঘোরানোর অভিযোগে পাঁচ মহিলা ও দু’জন পুরুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। আর হোটেল মালিকের ছেলে পুলিশকে ভুল পথে চালানোর কারণে ভর্ৎসনা করে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।