সন্দীপ্তা ভঞ্জ: ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে…’, প্রতিটা বাবা-মাই এমন স্বপ্ন দেখেন। কেউ চান তাঁর সন্তান যেন ইঞ্জিনিয়ার হন, কেউ বা ডাক্তার চান। জন্মের পর থেকেই সেই ইঁদুর দৌঁড় শুরু হয়। আর লক্ষ লক্ষ বাবা-মায়ের সেই স্বপ্নের পুঁজিকে ঘুটি বানিয়ে স্বার্থসিদ্ধি করে কিছু সংস্থা। আর ঠিক সেরকমই এক প্রেক্ষাপটে সাদামাটা গৃহবধূর সৎ উপায়ে স্বপ্নপূরণের গল্প বলে ‘কেমিস্ট্রি মাসি’।
সৌরভ চক্রবর্তী পরিচালিত এই সিরিজ দিয়েই ওয়েব দুনিয়ায় পা রাখলেন দেবশ্রী রায়। সিনেপর্দা থেকে দীর্ঘ বিরতির পর বছর খানেক আগেই টেলিভিশনে নতুন ইনিংস শুরু করেছিলেন। এবার ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও এলেন তিনি। ‘কেমিস্ট্রি মাসি’র চরিত্রে। ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট পাওয়া অরগ্যানিক কেমিস্ট্রির মেধাবী ছাত্রীকে বিয়ের পরই বিদায় জানাতে হয় চাকরির ইচ্ছেকে। সুখী গৃহকোণ সাজাতে সুচরিতা লাহিড়ি জলাঞ্জলী দেয় তার স্বপ্নকে। কিন্তু সন্তান সামলানোর বছর খানেক বাদে যখন তাঁর নতুন করে কেরিয়ার গড়ার ইচ্ছে হয়, তখনই প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় তাঁকে। এমন প্রেক্ষাপটেই ‘কেমিস্ট্রি মাসি’র গল্প সাজিয়েছেন পরিচালক সৌরভ চক্রবর্তী।
[আরও পড়ুন: শেল্টার হোমে নাবালিকাদের উপরে নির্যাতনের দলিল, মগজে ধাক্কা দেয় ‘ভক্ষক’, পড়ুন রিভিউ]
এই পরিসরে পুরো গল্প না ভাঙাই ভালো। আসা যাক, সিনেম্যাটিক দৃষ্টিভঙ্গীর আলোচনায়। ৬ পর্বের ‘কেমিস্ট্রি মাসি’ সিরিজে বেশ কয়েকটা প্লট রয়েছে। প্রথমত, এক সাদা-মাটা গৃহবধূর উড়ানের গল্প। দ্বিতীয়ত, সমকাম প্রেম। তৃতীয়ত, শিক্ষার নামে অসাধু সংস্থার কালো ব্যবসা ও তার সঙ্গে প্রশাসনের ‘গঠবন্ধন’। এমন রগরগে সমস্ত উপকরণ থাকা সত্ত্বেও যথাযথ ট্রিটমেন্টের অভাবে কেমন যেন অগোছালো ঠেকল! চিত্রনাট্যের বাঁধন আরও মজবুত হওয়া প্রয়োজন ছিল। এবং বেশ কিছু দৃশ্যে অভিনয়, অভিব্যক্তি বড্ড বাড়াবাড়ি রকমের। দেবশ্রী রায় হোক কিংবা শঙ্কর চক্রবর্তী দুই তাবড়া অভিনেতার অভিনয় নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই। দুজনেই ডিরেক্টর্স অ্যাক্টর। ‘কেমিস্ট্রি মাসি’র ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। কিছু দৃশ্যে দেবশ্রীর নীরবতাই ইমোশনাল দৃশ্যকে আরও গভীর করে তুলেছে। তবে শেষপাতে উল্লেখ্য, হইচইতে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিরিজ কিন্তু দেখতে খুব একটা একঘেয়ে লাগে না। প্রতিটা পর্ব ছোট দৈর্ঘ্যের বলেই হয়তো।