সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক যাত্রার শুভ সূচনা করেই ফেললেন বর্ষিয়াণ তামিল অভিনেতা কমল হাসান। রবিবার চেন্নাইয়ের পয়েস গার্ডেনের বাড়িতে গিয়ে সুপারস্টার রজনীকান্তের সঙ্গে সেরে ফেললেন প্রাথমিক সাক্ষাৎকার। তামিল সিনেমার দুই মহারথী যে জোটবদ্ধ ভাবে রাজনীতির ময়দানে নামতে চলেছেন, এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও রাজনীতির প্রসঙ্গ এড়িয়ে এই দেখা করার হেতুকে সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলছেন কমল হাসান। একই সঙ্গে রাজনৈতিক জোটের সম্ভাবনাকেও দূরেই রাখলেন দু’জনে।
এই প্রসঙ্গে তামিল অভিনেতা বলেন, ‘এটা কোনও রাজনৈতিক সাক্ষাৎকার নয়। সৌজন্য সাক্ষাৎকার। আমার রাজনীতিতে পদার্পণের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাঁকে জানাতে গিয়েছিলাম। রাজনৈতিক যাত্রা শুরুর আগে মানুষের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করাটাকে পছন্দের তালিকায় রাখছি। সেকারণেই এখানে আসা। বন্ধুত্বের অংশ হিসেবেই এই সাক্ষাৎকার। রাজনীতি নয়।’ তাঁকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন রজনীকান্ত।
[প্রেমিককে ভিডিও চ্যাটে রেখে হস্টেলের ঘরে আত্মঘাতী এমবিএ ছাত্রী]
কমল হাসান বেরিয়ে যাওয়ার পর রজনীকান্ত বলেন, ‘কমল তামিলনাড়ুর বাসিন্দাদের সেবা করতে চেয়েছেন। আমি তাঁর জন্য ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছি। খ্যাতি বা টাকার জন্য রাজনীতিতে আসছেন না কমল। শুধুমাত্র তামিলনাড়ু বাসীর সেবা করাই তাঁর মূল উদ্দেশ্য।’
দুই অভিনেতার রাজনৈতিক মতাদর্শ কি মিলতে চলেছে? বিতর্ক এড়িয়ে কমল হাসান জানিয়ে দেন, সময় এই কথা বলবে। সাধারণত দুটি রাজনৈতিক দলের জোটবন্ধনের প্রসঙ্গ আসে জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে। দুই মহারথীর দল যদি জাতীয় রাজনীতিতে কোনও মাইলফলক গড়তে পারেন তাহলে হয়তো জোটের সম্ভাবনা থাকলেও থাকতে পারে। তবে তা ভবিষ্যতেই। এখন নয়। তবে কমল হাসান এতকিছু বললেও সিনেম্যাটিক ডায়লগে জোটকে আটকে দিয়েছেন তামিল সুপারস্টার। নিজেই বলেছেন, কমলের সঙ্গে তাঁর অভিনয় ক্ষেত্রেও প্রচুর পার্থক্য রয়েছে। তাঁদের দু’জনের স্টাইলই আলাদা। রাজনীতিগত ভাবে তাঁদের মতাদর্শ আলাদা হতে চলেছে সেটা এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই স্পষ্ট করে দিলেন ‘শিবাজি দ্য বস’। দুই তামিল অভিনেতা একসঙ্গে অভিনয়ও করেছেন বিভিন্ন ছবিতে। তবে তা বেশ কয়েক দশক বেরিয়েছে। ১৯৭০ সালে তাঁদের একসঙ্গে সিনেমায় দেখা গিয়েছিল।
২১ ফেব্রুয়ারি নিজের রাজনৈতিক দল ঘোষণা করতে চলেছেন কমল হাসান। নিজের মুখেই জানিয়েছেন সেকথা। টাকা বা খ্যাতির জন্য নয়, রীতিমতো প্রাণের টানেই তাঁর রাজনীতিতে আসা। তিনি মানুষের সেবা করেই বাকি জীবনটা কাটাতে চান। কেন না অভিনেতা হিসেবে মৃত্যু হোক এমন ইচ্ছে তাঁর একদম নেই। তবে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের জন্যও লালায়িত নন তিনি। মানুষ খুশি মনে তাঁকে গ্রহণ করলেই হবে। যদি হেরেও যান দুঃখ নেই। কেন না ভোট, ভোটবাক্স, জনপ্রিয়তা এসব তাঁকে টানে না। তবে রাজনীতিতে এসে মানুষের রাজনীতি সম্পর্কে চিন্তাধারাটা বদলাতে চান। একটা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়ে তোলার প্রয়াস তাঁর রয়েছে। খুব শিগগির রামেশ্বরম, মাদুরাইয়ের কোনও একটি এলাকার হতদরিদ্র গ্রাম দত্তক নিয়ে কাজে নেমে পড়তে চান কমল হাসান। সেই গ্রামের মানুষের প্রাথমিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে চান। চান কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে। মাদুরাইতে আগামী ২১ ফ্রেব্রুয়ারি কমল হাসানের রাজনৈতিক দলের নাম ও পতাকার শুভ উন্মোচন হতে চলেছে।