সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেটা ২০০৯ সাল। ভুল করে পাঞ্জাব সীমান্ত ডিঙিয়ে পাকিস্তানে (Pakistan) চলে গিয়েছিলেন বিহারের বক্সারের বাসিন্দা ছবি মুশাহর (Chhavi Musahar)। দীর্ঘ ১২ বছর বন্দি ছিলেন পাকিস্তানের জেলে। বুধবার মুক্তি পেলেন তিনি। বুধবারই পাঞ্জাবের অমৃতসর সীমান্ত হয়ে ঘরে ফিরেছেন বক্সারের যুবক।
বছরের পর বছর ধরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত। তথাপি প্রায় প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাসে কয়েক জন নিরপরাধ বন্দিকে মুক্তি দেয় পাক সরকার। সৌভাগ্যবশত এবার সেই তালিকায় ছিল ছবির নাম। সেই সূত্রেই করাচি জেলের অন্ধকার কুঠুরি থেকে মুক্ত হলেন তিনি। অমৃতসর সীমান্তে রেডক্রস প্রতিনিধিদের হাতে ছবিকে তুলে দেয় পাক কর্তৃপক্ষ। যাবতীয় সরকারি প্রক্রিয়া সেরে গতকাল নিজের বাড়ি পৌঁছেছেন ছবি। কিন্তু কীভাবে ভুল করে পাকিস্তানে পৌঁছলেন তিনি?
[আরও পড়ুন: কান্দাহার বিমান অপহরণের ‘মুক্তিপণ’ জারগারকে এবার সন্ত্রাসবাদী তকমা ভারতের]
বারো বছর পরেও সেই ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ছবির দাবি, তিনি শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য ট্রেনে চাপলেও কোনওভাবে পৌঁছে যান পাঞ্জাবে। সেখান থেকে নাকি ভুল করে সীমান্ত ডিঙিয়ে ঢুকে পড়েন পাকিস্তানে। শুরুর কয়েক বছর কোনওভাবে শ্রমিকের কাজ জুটিয়ে দিন চলছিল তাঁর। ধরা পড়েননি। যদিও শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাক পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে আচমকা নিরুদ্দেশ হওয়া ছেলের খোঁজে থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার। সেটা শুরুর দিকের কথা। বিস্তর খোঁজাখুঁজিতেও ছবির সন্ধান না মেলায় ২০০৯ সালে ছবির স্ত্রী অনিতা সন্তানকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়েও করেন। এদিকে ছবির আত্মীয়রা বাড়িতে পরলৌকিক ক্রিয়ার আয়োজন করে ফেলেন। যদিও মা বীর্থি দেবীর বিশ্বাস ছিল, ছেলে ফিরে আসবে।
[আরও পড়ুন: একবারই দান করা যাবে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু, কৃত্রিম প্রজননের নিয়মে বড় বদল আনল কেন্দ্র]
মায়ের বিশ্বাসের জোর হোক বা ছবির সৌভাগ্য, ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় স্বারষ্ট্র মন্ত্রক জেলবন্দি ছবির সন্ধান পায় । সে তখন করাচির জেলে। সেই সময়েই পরিবারকেও বিষয়টা জানানো হয়। বীর্থি দেবী-সহ সকলে তাতে খুশি হলেও আজকের দিনটার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। ১২ বছর পর ঘরে ফিরেছে ছেলে। তাঁকে পাশে বসিয়ে বীর্থি দেবী বলেন, আজ জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
এদিকে আজই ১৯৭১ সালে যুদ্ধবন্দি ৫৪ জন ভারতীয় সেনা আধিকারিকের মুক্তির বিষয়ে কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া চাইল সুপ্রিম কোর্ট। সকলেই পাকিস্তানে জেলবন্দি রয়েছেন। উল্লেখ্য, এদের প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ার আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন পাক জেলে বন্দি মেজর কনওয়ালজিৎ সিংয়ের স্ত্রী জসবীর কৌর।