সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চরমে সংঘাত। এবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে টুইটারে ব্লক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। উগরে দিলেন ক্ষোভ। এই পদক্ষেপের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি।
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বিভিন্ন ইস্যুতে টুইট-পালটা টুইট নতুন কোনও ঘটনা নয়। এই সংঘাতের আবহে সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকের ফাঁকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিয়ে তিনি বলেন, “উনি প্রতিদিন একটা করে টুইট করে কখনও অফিসারদের, কখনও আমাকে গালাগালি দিচ্ছেন। অসাংবিধানিক কথাবার্তা বলছেন। আমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন। তার মানে আমরা বন্ডেড লেবার। আমরা কি রাজ্যপালের কেনা গোলাম? তিনি হয়ে গিয়েছেন সুপার পাহারাদার। প্রতিদিন ওনার টুইট দেখে আমার বিরক্ত লাগে। উনি এমন এমন টুইট করেন যা অমানবিক। তাই ব্লক করলাম। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”
[আরও পড়ুন: বেশ কিছু ক্ষেত্রে আরও ছাড় দিয়ে রাজ্যে বাড়ল কোভিড বিধির মেয়াদ, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
তিনি আরও বলেন, “আমি ৪ বার প্রধানমন্ত্রীকে (PM Narendra Modi) চিঠিতে লিখেছি ওনাকে সরিয়ে নিন। রাজ্যপাল রোজ হুমকি দিচ্ছেন। আদালত থেকে শুরু করে আয়কর, ইডি থেকে সিবিআই, ডিজি থেকে মুখ্যসচিব সকলকে ভয় দেখাচ্ছেন। বাংলার মানুষ মাথা নিচু করে চলেন না। আমরা গত এক দেড় বছর ধরে সহ্য করছি। প্রত্যেকটা ফাইল ফেলে রেখে দিয়েছেন। হাওড়া-বালি পুরসভার বিলে সই করেননি। সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার। উনি ঠিক করবেন কোনটা কার সাথে থাকবে না থাকবে? প্রত্যেকটা বিল আটকে দিয়েছেন।”
শনিবার রাতে নোয়াপাড়ায় খুন হন তৃণমূল নেতা। ওই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, “ওনার প্রশ্রয়ে বিজেপির গুন্ডারা রোজ লোক খুন করছে। খুনে সরাসরি উৎসাহ দিচ্ছেন রাজ্যপাল।” ‘মা ক্যান্টিন’ প্রকল্প নিয়ে দিনকয়েক আগে সরব হন রাজ্যপাল। সে প্রশ্নেরও জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও রাজ্যপালকে ‘পেগাসাসের নাভিশ্বাস’ বলে কটাক্ষ তাঁর।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের আবহে রাজ্যপালকে টুইটারে ব্লক করার সিদ্ধান্ত কার্যত নজিরবিহীন। টুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তের পালটা জবাব দেন জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar)। তিনি টুইটে লেখেন, “সংবিধানের ১৫৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী সাংবিধানিক রীতি ও আইনের শাসনকে কেউ ব্লক করতে পারে না। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন তাঁরা সংবিধানের প্রতি আস্থাশীল, অনুগত থাকবেন।”