সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'আইন যেমন আছে, আইনের ফাঁকও রয়েছে'। সেই ফাঁক গলে দেশে এখনও চলছে বাল্য বিবাহের মতো ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে লাগাম টানতে এবার কেন্দ্রকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনের গলদ দূর করার নির্দেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত। শুক্রবার এক মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ জানালেন, এই আইনে বেশকিছু ফাঁকফোকর রয়ে গিয়েছে তা সংশোধন করা প্রয়োজন। শুক্রবার শুনানি শেষে এ বিষয়ে জারি করা হয় গাইডলাইনও।
দেশের অঙ্গ রাজ্যগুলিতে বাল্য বিবাহ রোধের আইনের সঠিক ব্যবহার করা হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ করে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছিল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই মামলার শুনানিতে আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, অপ্রাপ্তবয়স্কদের পছন্দমতো বিয়ে করার অধিকারের যুক্তি দিয়ে কখনওই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন লঙ্ঘন মেনে নেওয়া যায় না। শুক্রবার এই মামলার পর্যবেক্ষণে আদালত জানায়, বাল্য বিবাহের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট নাবালক বা নাবালিকার জীবনসঙ্গী বাছার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ফলে কোনওরকম ব্যক্তিগত আইনের ভিত্তিতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনের অবমাননা করা যাবে না।
একইসঙ্গে, ২০০৬ সালে এই আইনের মূল এই আইনের মূল ভাবনার কথা মনে করিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, প্রশাসনকে এব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। বাল্য বিবাহ রোধের আইনের লঙ্ঘন হলে তার উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। মোটা অঙ্কের জরিমানাও ধার্য করা যেতে পারে। একইসঙ্গে আদালত জানায়, ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনটির নানা ধারা ২০০৬ সালে সংশোধন করা হলেও এখনও কিছু গলদ রয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের উচিৎ সেই ফাঁকগুলি মেরামত করা।
বহু রাজ্যে বাল্য বিবাহ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। এই সমস্যা সমাধানে আলাদা আলাদা প্রত্যেক জনগোষ্ঠীকে বাল্য বিবাহ রোধের আইন নিয়ে অবগত করা ও প্রশাসনিক আধিকারিকদেরও এব্যাপারে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিতে হবে পরামর্শ দেওয়া হয়। শুধু তাই নয় প্রান্তিক এলাকাগুলিতে নাবালিকাদের কাউন্সেলিং করানো, সচেতনতা অভিযান চালানোর পরামর্শ দেয় আদালত।