অভিষেক চৌধুরী, কালনা: ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর খবরের জের। পূর্বস্থলীর ন’পাড়ায় থাকা ছোট্ট আলিফের খোঁজখবর নিলেন পূর্ব বর্ধমানের শিশু সুরক্ষা দপ্তরের (Child Welfare Committee) কর্মীরা। শুক্রবার বিকেলে তাঁরা ওই এলাকায় আসেন। মা-বাবা ‘পরিত্যক্ত’ আলিফের সঙ্গে দেখা করেন ও তার খোঁজখবর নেন।
এমনকী, এদিন ভারচুয়ালি চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটির কাছে ওই দপ্তরের কর্মীরা তেরো বছরের ওই ছেলেটির সমস্যার কথা তুলে ধরেন। পরিস্থিতির চাপে পড়ে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া আলিফের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তাঁরা। এই দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন. বিষয়টি সংবাদমাধ্যম থেকে জানার পরই ছুটে এসেছি। আমরা ওর কথা ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের জানাব। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলিফের দেখভালের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। যাতে ও পড়াশোনা করতে পারে তার ব্যবস্থাও করা হবে।
[আরও পড়ুন: Tokyo Olympics: জ্যাভলিনে সোনা জিতে ইতিহাস গড়লেন ভারতের Neeraj Chopra]
নাবালক আলিফ খাঁয়ের বাড়ি পূর্বস্থলী-১ ব্লকের শাহজাদপুর এলাকায়। চার-পাঁচ বছর আগে মা মনোয়ারা বিবি তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। কয়েক মাস আগে বাবা রহিম খাঁ-ও ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন। এমনই এক পরিস্থিতিতে অথৈ জলে পড়েছে আলিফ। পরিস্থিতির চাপে পড়াশোনাও ছাড়তে হয়েছে। উনুনের সামনে বসে চা তৈরি করেই কাটছে তার শৈশব। বাড়িতে দাদু-ঠাকুরমা থাকলেও হাত পুড়িয়ে রান্না করতে শিখতে হয়েছে তাকে। দাদু জাহের খাঁ মাঝেমধ্যে খাওয়ার জন্য ডাকলেও ঠাকুরমা সেইভাবে দেখে না বলেই জানায় আলিফ। তাই নিজেই রান্না করে নিজের পেট ভরায় সে। আর পেট চালাতে খুলেছে চায়ের দোকান। সেখানে নিজেই অপটু হাতে চা বানিয়ে বিক্রি করে সে।
এই জীবন সংগ্রামের খবর ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ প্রকাশিত হতেই শিশু সুরক্ষা দপ্তরের কর্মীরা আলিফের সঙ্গে দেখা করেন। সে পড়াশোনা করতে চায় কিনা জানতে চান। আলিফ জানিয়েছে, সে সুয়োগ পেলে আবার পড়তে চায়। আলিফ খাঁয়ের কথায়, “আমার সমস্যা ওঁরা জানতে চান। আমার পাশে থেকে সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন।”