অর্ণব আইচ: হাড়হিম করা ঠান্ডার মাঝেও উত্তেজনায় উত্তপ্ত ভারত-চিন সীমান্ত। লাদাখে লালফৌজের আগ্রাসনের পর থেকেই মুখোমুখি আণবিক ক্ষমতা সম্পন্ন দুই পড়শি দেশ। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (LAC) একটি ক্ষুদ্র স্ফুলিঙ্গ ঘটাতে পারে যুদ্ধের বিস্ফোরণ। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ উসকে ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল চৌহান জানিয়েছেন সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশ সীমান্তে দ্রুত সামরিক পরিকাঠামো নির্মাণ করছে চিনা সেনাবাহিনী (China)।
[আরও পড়ুন: সংকটজনক করোনায় আক্রান্ত অনিল ভিজ! স্থানান্তরিত করা হল গুরুগ্রামের হাসপাতালে]
বিজয় দিবস উপলক্ষে কলকাতায় সেনার সদরদপ্তর ফোর্ট উইলিয়ামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-ইন-চিফ ইস্টার্ন কমান্ড অনিল চৌহান বর্তমান পরিস্থিতি সাফ তুলে ধরে বলেন, “লাদাখ সীমান্তে চিনা আগ্রাসন ও গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর চিন ও ভারতের সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশ্বাস সম্পূর্ণ উবে গিয়েছে। শীতের জন্য আমরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সেনা প্রত্যাহার করছি। ইস্টার্ন কমান্ডের অধীনে সিকিমে প্রায় অরুণাচল প্রদেশে হাজার কিলোমিটারেরও বেশি সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে দুই দেশ। আমরা জানতে পেরেছি সিকিমে ও অরুণাচলের কামেং সীমান্তে দ্রুত সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। সীমান্তে গ্রাম তৈরি করে যাযাবরদের সেখানে বসাচ্ছে চিন। কিন্তু যেকোনও পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করতে শীতের মরশুমেও আমরা সম্পূর্ণভাবে তৈরি। তবে প্রচণ্ড ঠান্ডার জন কিছু এলাকায় ভারত ও চিন দু’পক্ষই টহল দিতে পারবে না। এটা শুধু ইস্টার্ন কমান্ডের জন্য নয়। ” তিনি আর বলেন, “লাদাখে সংঘর্ষের পর ইস্টার্ন কমান্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলিতে বড় কোনও চিনা আগ্রাসন ঘটেনি। সন্ত্রাসবাদী গতিবিধি কমে আসায়। সন্ত্রাসদমন অভিযানে মোতায়েন জওয়ানদের সংখ্যা কমিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। আমফানের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সেনাবাহিনী সব সময় প্রশাসনের পাশে দাঁড়িয়েছে। কলকাতার মানুষ, প্রশাসন ও পুলিশের কাছে সেনাবাহিনী যে সম্মান পেয়েছে তা অতুলনীয়।”
উল্লেখ্য, এপ্রসঙ্গে চিন সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ ব্রহ্ম চেল্লানি আগেই জানিয়েছিলেন, কমিউনিস্ট পার্টির হান চাইনিজ ও তিব্বতীয় সদস্যদের ব্যবহার করে অরুণাচল প্রদেশ (Arunachal Pradesh) সীমান্তে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চাইছে চিন। দক্ষিণ চিন সাগরে যেমন প্রথমে নিজেদের দেশের মৎস্যজীবীদের ঢুকিয়ে জলসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল বেজিং। ঠিক একই ভাবে অরুণাচল প্রদেশে বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের লোক অনুপ্রবেশ করিয়ে পরিকাঠামো তৈরির মাধ্যমে ভারতের জায়গা দখলের ছক কষছে।